একযোগে: মঞ্চে সকলে গান গাইছেন। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
‘‘সর্কিট বেঞ্চটা এইবার হামার চাই।’’ এটি স্লোগান নয়, ভাওয়াইয়া গানের একটি পদের শেষ লাইন।
জলপাইগুড়িতে কলকাতা হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধনের দাবি নিয়ে ভাওয়াইয়া গানও বাঁধা হল। গত কয়েকদিন ধরেই জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী ভবনের সামনে ধরনা চালাচ্ছে তৃণমূল। টানা ধরনা চলছে। সকাল দশটা থেকে সন্ধ্যে ছ’টা পর্যন্ত মাইক ব্যবহার করে স্লোগান, বক্তৃতা চলছে। তারই ফাঁকে ফাঁকে শোনা যাচ্ছে লোকগান। সেই সব গানে প্রথাগত পদের সঙ্গে শোনা যাচ্ছে সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে বাঁধা গানও।
পরিচিত শিল্পী দুর্গা রায় সার্কিট বেঞ্চ নিয়ে গান বেঁধেছেন। ভাওয়াইয়ার দল রয়েছে জগৎজ্যোতি দেবসিংহের। তিনিই একটু নতুন গান সাজিয়েছেন বেঞ্চ নিয়ে। গানের প্রথম লাইন, ‘শোনো জলপাইগুড়ির জনগণ/আইসো করি আন্দোলন/হাইকোর্টটা হামার চাই।’ এর পরে ঘুরে ফিরে আসবে আরেকটি লাইন যাতে হাইকোর্টের বদলে উচ্চারিত হচ্ছে সার্কিট বেঞ্চটা হামার চাই। জগৎজ্যোতিবাবু বলেন, ‘‘আমাদের প্রতিদিনকার চাওয়া পাওয়া, স্বপ্ন, সে সব নিয়েই তো গান তৈরি হয়। সার্কিট বেঞ্চ আমাদের স্বপ্ন। তাই গান লিখে ফেললাম।’’
জাতীয়তাবাদী শিল্পী গোষ্ঠীর বেঞ্চ নিয়ে লেখা গান শুনে ধরনা মঞ্চে হাতে তাল দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারাও। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বললেন, ‘‘একদিন তো বেঞ্চ নিয়ে একটি দল কবিগানও শোনালো। বেশ লাগল। সার্কিট বেঞ্চ জলপাইগুড়িবাসীর আবেগের কতটা দখল করে রয়েছে তা বোঝা যায়। বক্তৃতার মাঝেমধ্যে গান বেশ ভালই লাগছে।’’
গত ৬ ডিসেম্বর থেকে জলপাইগুড়িতে বেঞ্চ উদ্বোধন চেয়ে ধরনায় বসেছে তৃণমূল। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভবাবু প্রতিদিনই মঞ্চে থাকছেন। এক এক দিন এক একটি ব্লক সভা আয়োজনের দায়িত্বে থাকছে। আজ শনিবার মশাল মিছিল হবে বলে জানিয়েছে তৃণমূল। এ দিন ধরনা মঞ্চ থেকে জেলার সব রাজনৈতিক দল এবং ক্লাব, প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের ধরনা মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি।
সৌরভবাবু বলেন, “যদি দ্রুত রাষ্ট্রপতির সই না হয়, বিজেপি যদি দিল্লিতে ফাইল আটকে রাখে, তবে ওই দলের নেতারা ফের উত্তরবঙ্গে সভা করতে এলে সাধারণ মানুষের প্রতিরোধের মুখে পড়বেন।’’ তৃণমূল বেঞ্চ নিয়ে রাজনীতি করছে বলে বিজেপির তরফে পাল্টা দাবি করা হয়েছে।