নোটকাণ্ডের ধাক্কায় এবার পিকনিকে কমছে রান্নার পদ

আয়োজনে কাঁচি চললেও বড়দিনে পিকনিক দিয়েই শুরু হল বর্ষশেষের উৎসব। একে বড়দিন, তাতে রবিবার। নদী-বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকা, পার্ক, পাহাড়ের কাছাকাছি এলাকায় চলল দেদার পিকনিক।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:২০
Share:

তিস্তা চরে চলছে বড়দিনের পিকনিক। জলপাইগুড়িতে রবিবার। — সন্দীপ পাল

আয়োজনে কাঁচি চললেও বড়দিনে পিকনিক দিয়েই শুরু হল বর্ষশেষের উৎসব। একে বড়দিন, তাতে রবিবার। নদী-বনাঞ্চল লাগোয়া এলাকা, পার্ক, পাহাড়ের কাছাকাছি এলাকায় চলল দেদার পিকনিক। নগদ সঙ্কটের জেরে এ বছর অবশ্য বেশ কিছু চেনা এলাকাতেও কম ভিড়ের দেখা মিলেছে। কোথাও আবার পিকনিকের মেনুতে মাত্র একটি পদ। সংখ্যা কম ডিজে বক্সেরও। এ বারে বাড়তি নজরদারি ছিল বেশ কিছু পিকনিক স্পটে। শিলিগুড়ি লাগোয়া বৈকুন্ঠপুরে সাহু নদীর পাড়ে মদ্যপান রুখতে পুলিশ এবং বনকর্মীরা নজরদারি এবং তল্লাশি চালায়। পিকনিকের সঙ্গে বিভিন্ন চার্চেও দেখা গিয়েছে ভিড়। কচিকাচাদের মতো লাল রঙের সান্টা টুপি পরে চার্চের মাঠে বসে সেলফি তুলতে অথবা রেস্তোরাঁয় আড্ডায় মেতেছেন বড়রাও।

Advertisement

ফালাকাটার কুঞ্জনগর ইকোপার্ক থেকে চিতাবাঘ, হরিণ সহ সব বন্যপ্রাণীদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ বছর সেখানে পিকনিক তেমন জমেনি। অন্য বছর বড়দিনে কুঞ্জনগরে উত্তরবঙ্গ, অসম এমনকি ভুটানের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পিকনিক দলের ভিড়ে জমজমাট থাকত। এ বছর ফালাকাটার লাগোয়া এলাকা থেকে বড়দিনে মাত্র পাঁচটি দল পিকনিক করতে এসেছে। তার মধ্যে একটি দল ভুটানের ফুন্টসোলিং শহরের। বন্যপ্রাণিদের দেখা না পেয়ে দলটি হতাশ। নগদের সঙ্কট এমনিতেই ভিড় কমিয়েছে। সঙ্গে বুনোদের অনুপস্থিতিতে পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়নি কুঞ্জনগরে।

বড়দিনের ছুটিতে রবিবার মালদহে পিকনিকের আসর ছিল জমজমাট। গৌড় থেকে শুরু করে আদিনা সর্বত্রই পিকনিকের দলগুলির উপচে পড়া ভিড় ছিল। মালদহের জেলা সদর ইংরেজবাজার শহর সংলগ্ন কাজলদিঘি ও ফার্মের মাঠ এলাকাতেও পিকনিকের জমজমাট আসর বসেছিল। শোনা গিয়েছে পিকনিক নিয়ে বিস্তর অভিযোগও। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে আসা পিকনিক দলগুলির অভিযোগ, মালদহের পিকনিক স্পটগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে কোনও ব্যবস্থাই নেই। আদিনা ছাড়া জলের কোনও বন্দোবস্ত নেই।

Advertisement

এদিকে মালদহের পিকনিক স্পটগুলিতে থার্মোকল ও প্লাস্টিকের থালা ব্যবহার বন্ধে উদ্যোগী হয়েছিল জেলা প্রশাসন। এদিন গাজোলের আদিনা পিকনিক স্পট থেকে সে ব্যাপারে সচেতনতা করার কাজ শুরু করা হয়েছে। ব্লক ও জেলা প্রশাসনের তরফে উৎসাহী ব্যবসায়ীদের এনে সেখানে পিকনিক করতে আসা দলগুলির কাছে শালপাতা ও কাগজের থালা বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়। জেলা প্রশাসনের আধিকারিক অনুপ দত্ত জানিয়েছেন, নির্মল জেলা গড়ার লক্ষ্যে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ও পয়লা জানুয়ারি জেলার বাকি পিকনিক স্পটগুলিতেও একই উদ্যোগ নেওয়া হবে। জঙ্গল লাগোয়া চড়ুইভাতির এলাকায় হেল্পডেক্স বসিয়ে টানা নজরদারি চালিয়ে বড়দিনে শান্তিপূর্ণ পিকনিকের আবহ তৈরি করে দিনের শেষে দক্ষিণ দিনাজপুরে নায়ক পুলিশই।

দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে রবিবার রেলস্টেশনের মাঠ, জঙ্গল থেকে বন দফতরের দোগাছি, ডাঙা, ডাঙিতে সকাল থেকে পিকনিক দলের ভিড় উপচে পড়েছিল। বিগত দিনে নেশাগ্রস্ত একাংশ ছেলেমেয়ের নাচানাচিকে কেন্দ্র করে গন্ডগোল মারপিটের মতো ঘটনার সাক্ষী ছিল বালুরঘাট। দূরন্ত গতিতে বাইকের দাপাদাপি রোধেও এ দিন ট্রাফিক পুলিশ তৎপর ছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন