বাঘ গুনতে কোমর বাঁধছে রাজ্য

কথায় বলে, বাঘে ছুলে আঠেরো ঘা। নেওড়া ভ্যালির জঙ্গলে পরপর তিনবার ক্যামেরায় বাঘ ধরা পড়ার পরে এখন সেই আঠেরো ঘা খাওয়ার মতো অবস্থা বন দফতরের। কারণ, সকলেরই এক প্রশ্ন— উত্তরবঙ্গে কোথায় গেলে বাঘ দেখা যাবে? বাঘ খুঁজতে তাই তারা ঢুঁড়ে ফেলতে চাইছে সব জঙ্গল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৭ ০২:৪৯
Share:

বাঘমামা: নেওড়াভ্যালিতে দেখা গিয়েছিল এই বাঘ। ফাইল চিত্র

কথায় বলে, বাঘে ছুলে আঠেরো ঘা। নেওড়া ভ্যালির জঙ্গলে পরপর তিনবার ক্যামেরায় বাঘ ধরা পড়ার পরে এখন সেই আঠেরো ঘা খাওয়ার মতো অবস্থা বন দফতরের। কারণ, সকলেরই এক প্রশ্ন— উত্তরবঙ্গে কোথায় গেলে বাঘ দেখা যাবে? বাঘ খুঁজতে তাই তারা ঢুঁড়ে ফেলতে চাইছে সব জঙ্গল। মঙ্গলবার সুকনা বন দফতরে হাতি সুমারির জন্য কর্মী প্রশিক্ষণের কাজ দেখতে এসে এই কথাটাই জানালেন প্রধান মুখ্য বনপাল প্রদীপ ব্যাস।

Advertisement

মঙ্গলবার সুকনায় প্রদীপের সঙ্গে হাজির ছিলেন একাধিক বনকর্তা। সেখানেই ‘প্রজেক্ট টাইগারের’ অধিনে আগামী তিন বছরের জন্য বিভইন্ন জঙ্গলে বাঘ খোঁজার কাজ শুরুর কথা জানান প্রদীপ। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের বিভিন্ন জঙ্গলে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার আছে ঠিকই, কিন্তু কোথায় ক’টা রয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তা দেখার জন্যই নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হচ্ছে।’’

কোন কোন জঙ্গল টার্গেট করেছেন তাঁরা? প্রদীপ জানালেন, নেওড়া ভ্যালি, বক্সা, সিনচল এবং সিঙ্গািললায় চলবে মূল প্রকল্পের কাজ। বাদ যাবে না গরুমারা, চাপড়ামারি, মহানন্দা অভয়রাণ্যও। অর্থাৎ, বাঘের খোঁজে তাঁরা ঢুঁড়ে ফেলবেন উত্তরবঙ্গের সব ক’টি জঙ্গল।

Advertisement

কী ভাবে খোঁজা হবে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার? প্রদীপ ব্যাস জানালেন, জঙ্গলে ট্র্যাপ ক্যামেরা বসানো, জঙ্গলের কোর এরিয়ায় খোঁজ এবং বনবস্তির বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলা তো হবেই। পাশাপাশি, খুঁজে দেখা হবে বাঘের পায়ের ছাপ। খোঁজা হবে বাঘের বিষ্ঠাও। এমনকী, গ্রামে বন্যপ্রাণীর হানায় মাঝেমাঝে যে গরু-ছাগল মারা যায়, সেই মড়িগুলো দেখেও বোঝার চেষ্টা হবে কীসে মেরেছে তাদের? বাঘ না চিতাবাঘ?

প্রধান মুখ্য বনপাল জানান, এই কাজের জন্য ৫৫ লক্ষ টাকা বাজেট ধরা হয়েছে। সময় তিন বছর।

তবে শুধু বাঘই নয়, কেন্দ্রীয় বন মন্ত্রকের নির্দেশে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে একযোগে হাতি সুমারির কাজও শুরু হতে চলেছে।

আগামী ২৭ মার্চ থেকে তিন দিন উত্তরবঙ্গ, অসম, নাগাল্যান্ড, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ে একসঙ্গে হাতি সুমারি চলবে। এই নিয়ে সুকনা ছাড়াও মূর্তি, রাজাভাতখাওয়া, মাদারিহাটে বনকর্মী, স্বেচ্ছাসেবীদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ হয়েছে। জঙ্গলের এলাকা ধরে, নির্দিষ্ট রাস্তা তৈরি করে তার দু’পাশে হাতির বিষ্ঠা খুঁজে এবং ওয়াচ টাওয়ার-জলাশয়ে নজর রেখে বোঝার চেষ্টা হবে, হাতির সংখ্যা ঠিক কত।

এত দিন প্রতিটি রাজ্য নিজের মতো করে হাতি সুমারি করত। তাতে সেই সময় এক রাজ্যের হাতি অন্য রাজ্যে চলে গেলে হিসেবে গোলমাল হয়ে যেত। এই সমস্যা মেটাতে একসঙ্গে রাজ্যগুলিতে হাতি সুমারি হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন