কোথায় ঢুকছে হাতি, জানাবে সেন্সর

দফতর কর্তাদের ইঙ্গিত, ভাল ফল মিললে পুরো উত্তরবঙ্গেই এই সেন্সর বসানো হতে পারে। সঙ্কোশ থেকে মেচি পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে হাতি করিডোরে অন্তত ২০০ বনবস্তি রয়েছে। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০১৯ ০৫:০৮
Share:

ফাইল চিত্র।

বনবস্তিগুলোয় হাতি ঢোকার হার আগের চেয়ে বেড়েছে, এমনই মনে করছেন মহানন্দা অভয়ারণ্যের কর্তারা। সোমবার ছিল আন্তর্জাতিক হাতি দিবস। এ দিনই গ্রামে হাতি ঢোকার খবর আগাম জানাতে সেন্সর বসানোর সিদ্ধান্ত নিল বন দফতর। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই পাইলট প্রকল্প আগেই শুরু হয়েছিল গরুমারা অভয়ারণ্যে। এ বার মহানন্দা অভয়ারণ্যের দু’টি বনবস্তিতে বসানো হচ্ছে ১২টি সেন্সর। হাতি সেন্সর পেরলেই নিকটবর্তী বিট অফিসে বেজে উঠবে বিপদ সঙ্কেত।

Advertisement

দার্জিলিং বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও জিজু জেসপার জে বলেন, ‘‘খুব অল্প খাটুনিতে গ্রামে পর্যাপ্ত খাবার পাওয়া যাচ্ছে বলে গ্রামে হাতি ঢোকার হার অনেকটাই বেড়েছে। করিডোরগুলোয় এরকম সেন্সর গরুমারায় খুব ভাল ফল দিয়েছে। তাই এখানেও দু’টি পর্যায়ে সেন্সর বসানো হচ্ছে।’’ আগে গ্রামের চারদিকে বৈদ্যুতিক তার দিয়ে হাতি আটকানোর চেষ্টা করা হত। তাতে ঝুঁকি ছিল মানুষ ও প্রাণী মারা যাওয়ার। এই প্রকল্প সফল হলে তার আর প্রয়োজন হবে না বলে জানাচ্ছে বন দফতর। দফতর কর্তাদের ইঙ্গিত, ভাল ফল মিললে পুরো উত্তরবঙ্গেই এই সেন্সর বসানো হতে পারে। সঙ্কোশ থেকে মেচি পর্যন্ত উত্তরবঙ্গে হাতি করিডোরে অন্তত ২০০ বনবস্তি রয়েছে।

সেন্সর প্রস্তুতকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সভাপতি কৌস্তভ চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা প্রথম পর্যায়ে পঞ্চাশটি সেন্সর বসিয়েছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন এলাকায় আরও ১০০টি সেন্সর বন দফতরের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে বসানো হবে। এশিয়ান এলিফ্যান্ট সাপোর্ট নামে একটি সংস্থা আমাদের প্রকল্পের খরচ দিচ্ছে। রক্ষণাবেক্ষণ আমরাই করব।’’ সংস্থার সেন্সর ডিজাইনার ইঞ্জিনিয়ার শিমু সাহা জানান, দু’টি খুঁটির মাঝে ব্যাটারি বা সৌরশক্তিতে কাজ করবে ওই সেন্সর। একটি খুঁটিতে থাকবে চার রকমের সেন্সর। সেগুলো হাতির গায়ের তাপমাত্রা, উচ্চতা এবং কতটা কাছে রয়েছে হাতি সেই তথ্য ইনফ্রা রশ্মি দিয়ে প্রায় ২০০ মিটার দূরে বসানো আর একটি খুঁটিতে পাঠাতে থাকবে। দু’টি খুঁটির মধ্যের এই রশ্মির সরলরেখাটি যতগুলো হাতি পার করবে নিকটবর্তী বিট অফিসে ততবার বাজবে। হাতি ঢোকার আগাম খবর গ্রামে চলে এলে নিরাপত্তা এবং ফসল রক্ষা দু’টিই তুলনায় সহজ হবে বলে আশা করছেন বনকর্তারা।

Advertisement

সুকনা রেঞ্জের পুণ্ডিং এবং চামটা বনবস্তি এলাকায় হাতির তাণ্ডবে নিয়মিত ক্ষতির মুখে পড়ছেন বাসিন্দারা। পুণ্ডিংয়ের বাসিন্দা হরকাবাহাদুর রাই বলেন, ‘‘খুব ভয়ে থাকতে হচ্ছে। রবিবারও হাতি এসে ধান খেয়ে গিয়েছে। যদি হাতির খবর আগে পাওয়া যায়, খুবই সুবিধা হবে।’’ এ দিন সুকনায় শিলিগুড়ি কলেজের কিছু ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা কর্মসূচি পালন করে বন দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন