পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কোচবিহারে ঘর গোছানোর কাজে নামছে ফরওয়ার্ড ব্লক। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৯-৩১ মার্চ সংগঠন চাঙ্গা করতে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের পরিকল্পনা পাকা হয়ে গিয়েছে। দলের রাজ্য নেতা নরেন চট্টোপাধ্যায় ও হাফিজ আলম সাইরানি ওই সময় কোচবিহারে থাকবেন। তাঁদের তদারকিতেই সদস্য পদ নবীকরণ সহ অন্য কাজ করা হবে। ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক পরেশ অধিকারী বলেন, “পঞ্চায়েত ভোটের কথা ভেবে প্রস্তুতি হচ্ছে। রাজ্য নেতৃত্বের তদারকিতে সদস্য সংগ্রহের অভিযান হবে। যাঁরা দুর্দিনে দলের সঙ্গে থাকবেন তাঁদের ব্যাপারে এ ক্ষেত্রে বাড়তি গুরুত্বও দেওয়া হচ্ছে।”
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, বাম আমলে কোচবিহার বরাবর ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল। দিনহাটা, সিতাই বিধানসভা তো বটেই কোচবিহার উত্তর, দক্ষিণ, মেখলিগঞ্জ ওই বাম শরিকদের দখলে ছিল। জেলার ন’টি বিধানসভার মধ্যে পাঁচটি ছাড়াও লোকসভাতেও ফব-র নিয়ন্ত্রণ ছিল। রাজ্যে পালাবদলের সময় থেকে ওই ছবি বদলাতে শুরু করেছে। গত বিধানসভা ভোটে কোচবিহার উত্তর ছাড়া বাকি আটতিতেই জিতেছে তৃণমূল। লোকসভার উপনির্বাচনেও ফব প্রার্থীর জামানত জব্দ হয়। বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে কোচবিহারে। সব মিলিয়েই পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে পুরোন দুর্গে আসন জেতা নিয়ে দলের অন্দরে হিসেব নিকেশ শুরু হয়েছে। তাই সদস্য পদ সংগ্রহ অভিযানকে হাতিয়ার করে বাস্তব ছবিটা বুঝে নিতে চাইছেন নেতারা।
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাইয়ের তালিকা তৈরিতেও সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘গত পঞ্চায়েত ভোটে ফবর প্রতীকে জেলায় প্রায় আড়াইশোর বেশি প্রার্থী পঞ্চায়েত স্তরে জয়ী হন। বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েতে প্রধান হন ফব-র টিকিটে জয়ীরা। পালাবদলের পরে অবস্থা বদলাতে শুরু করে। তাই এ বার টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘বিশ্বস্ত’দের খোঁজা হচ্ছে। দিনহাটার দুর্গে অস্তিত্ব রক্ষাও ফব-র সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। দলের এক নেতা জানান, উদয়ন গুহ তৃণমূলে যাওয়ায় লড়াইটা কঠিন হবে। ফব-র জেলা সম্পাদক অবশ্য ওই বক্তব্য মানতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘লড়াই নীতির, ব্যক্তির নয়।’’
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে কোচবিহারে শেষ বার সদস্য সংগ্রহ অভিযান করা হয়। সে সময় সক্রিয় ও সহযোগী মিলিয়ে প্রায় দু’হাজার সদস্য ছিলেন। তাঁদের একাংশ নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন। দলের এক নেতা জানান, পঞ্চায়েতের আগে অভিযানে নিষ্ক্রিয়রাও চিহ্নিত হবেন।