অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের বাড়তি পুষ্টি জোগাতে এ বার মালদহে বিলি হবে ফল গাছের চারা। চলতি বর্ষাতেই পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের পরিবারের হাতে অন্তত পাঁচটি করে ফল গাছের চারা তুলে দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, জেলার দু’টি পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিত্সাধীন শিশুদের পরিবারের হাতে খাঁচা সহ হাঁস ও মুরগিও দেওয়া হবে। একশো দিনের কাজের প্রকল্প দফতর এবং প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের সঙ্গে যৌথ ভাবে এই কাজ হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় এই মুহূর্তে পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত অপুষ্টিতে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা ৫২৫৯ জন। এঁরা সকলেই কোনও না কোনও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে যায় এবং সেখানে সুষম খাবারের পাশাপাশি একটি করে ডিম সেদ্ধ তাদের জন্য বরাদ্দ। এঁদের মধ্যে আবার ৭২৬টি শিশু মারাত্মক ভাবে অপুষ্টিতে আক্রান্ত। তাদের পালা করে ওই দু’টি পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করে চিকিত্সা করানো হচ্ছে। একটি কেন্দ্র রয়েছে কালিয়াচক ২ ব্লকের বাঙিটোলা গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বরে ও অপরটি পুরাতন মালদহের মৌলপুর হাসপাতাল চত্বরে।
এ দিকে দফতরের জেলা নোডাল অফিসার সুকান্ত সাহা বলেন, ‘‘আমরা ওই শিশুদের তালিকা করেছি এবং বর্ষার আগেই তাদের পরিবারের হাতে আম, পেয়ারা, সবেদা, আপেল কুল ও বেদানার গাছের চারা তুলে দেব। উদ্যানপালন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা ভাল মানের ফল গাছের চারা দেব এবং হাঁস-মুরগি দেবে প্রাণিসম্পদ দফতর।’’
কালিয়াচক ২ ব্লকের পঞ্চানন্দপুর ২ পঞ্চায়েতের বাসিন্দা আনন্দ ও সরস্বতী মণ্ডলের একমাত্র ছেলে ১৪ মাসের শুভজিৎ মণ্ডল এখন চিকিত্সাধীন রয়েছে বাঙিটোলা পুষ্টি পুনর্বাসন কেন্দ্রে। আনন্দবাবু পেশায় দিনমজুর। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসার। তিনি বলেন, ‘‘জন্মের কয়েক মাস পর থেকেই ছেলেকে অপুষ্টি গ্রাস করেছে। আমাদের মতো গরিব মানুষের কাছে এটা বড় পাওনা। ছেলের মুখে অন্তত একটি করে ফল ও ডিম তুলে দিতে পারব।’’ একই বক্তব্য ওখানেই ভর্তি বছর দুয়েকের সফিরুদ্দিন শেখের বাবা সরিফুল শেখেরও।