ভোরের আলোর জন্য অপেক্ষা গজলডোবায়

রবিবার গজলডোবায় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক ও এই প্রকল্পে বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর এ খবর জানান রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৩০
Share:

জল কমতেই তিস্তার বুকে নৌকো নিয়ে পর্যটকদের সেলফি। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক

অবশেষে ‘ভোরের আলো’ ফুটতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের পর্যটন প্রকল্পে৷ আগামী ডিসেম্বর থেকেই গজলডোবার ওই পর্যটন হাবে থাকার সুযোগ পাবেন পর্যটকরা৷ এমনটাই দাবি করলেন সংশ্লিষ্ট পর্যটন দফতরের আধিকারিকেরা।

Advertisement

রবিবার গজলডোবায় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক ও এই প্রকল্পে বিনিয়োগকারী সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে আলোচনার পর এ খবর জানান রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব৷ তিনি বলেন, ‘‘ডিসেম্বরের মধ্যে এই পর্যটন কেন্দ্রে যাতে তাঁবুতে রাত্রিবাসের সুযোগ পর্যটকরা পান তার ব্যবস্থা হচ্ছে৷ অন্তত ২০-৩০ জন পর্যটকের থাকার ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে৷ বুকিং-এর জন্য যে সিস্টেম ইতিমধ্যেই অন্য জায়গায় চালু রয়েছে, সেই একই সিস্টেম এখানেও হবে৷’’ তবে তিনি এটাও জানান যে তখনও একই সঙ্গে পর্যটনকেন্দ্র গড়ার কাজও চলতে থাকবে। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব ভাবেই এই হাবটি তৈরি করা হচ্ছে, এই দাবিও করেছেন তিনি।

গজলডোবায় ২০৮ একর জমির উপরে তৈরি হচ্ছে এই ইকো ট্যুরিজম হাব৷ যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভোরের আলো’৷ পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে তিনটি সংস্থা এই প্রকল্পে বিনিয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়৷ যার মধ্যে দু’টি সংস্থা ইতিমধ্যে কাজও শুরু করে দিয়েছে৷ বাকি একটি সংস্থাও ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শুরু করবে৷

Advertisement

এ দিন দুপুরের এই বৈঠকেহাজির ছিলেন পর্যটন দফতরের শীর্ষ কর্তা ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরের কর্তারা। উপস্থিত ছিলেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক রচনা ভকত ও শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ৷ তবে বন দফতরের কর্তারা বৈঠকে যোগ দেননি৷

পর্যটনমন্ত্রী এ দিন জানান, রাজ্য সরকার এই পর্যটন হাব তৈরি করতে ইতিমধ্যেই ১২০ কোটি টাকা খরচ করেছে৷ সরকারের তরফে আরও তিনশ থেকে চারশো কোটি টাকা খরচ করা হবে৷ এই প্রকল্পে দ্বিতীয় পর্যায়ে পিপিপি মডেলে কাজ করার জন্য বেশ কিছু বিনিয়োগকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই আগ্রহ প্রকাশ করেছে৷ তাদের নিয়ে শীঘ্রই কলকাতায় বৈঠকে বসা হবে বলে জানান তিনি।

পর্যটন মন্ত্রী জানান, বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি রাজ্যের পর্যটন দফতরও এই হাবে কয়েকটি স্থায়ী কটেজ তৈরি করবে৷ সেইসঙ্গে সেচ দফতর একটি পরিদর্শন বাংলো ও যুব কল্যাণ দফতর একটি যুব আবাস তৈরি করবে৷ এই পর্যটন কেন্দ্র থেকে সরস্বতীপুর চা বাগান হয়ে বেঙ্গল সাফারি পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তায় বেশ কিছু কালভার্ট তৈরির কাজ দ্রুত শুরু হবে৷ সেই সঙ্গে পর্যটন হাব থেকে লাটাগুড়ি যাওয়ার বিকল্প একটি রাস্তাও তৈরি করা হবে৷

পর্যটন পার্কের ভেতরে একটি অর্কিড পার্ক গড়ারও পরিকল্পনা রয়েছে দফতরের৷ পাশাপাশি পিলখানা থেকে শুরু করে হাতিদের স্নান দেখার সুযোগও পাবেন পর্যটকরা৷

এ দিনের বৈঠক শেষে পর্যটনমন্ত্রী জানান, পর্যটন হাবে একটি ইন্টিগ্রেটেড থানাও তৈরি হবে৷

পাশাপাশি এখানে পর্যটকরা যাতে স্বাচ্ছন্দ পেতে পারেন তারও ব্যবস্থা থাকবে৷ পর্যটনমন্ত্রী জানান, মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেটের কানেকশন নিয়ে পর্যটকরা যাতে কোন সমস্যায় না পড়েন সে জন্য শীঘ্রই বেসরকারি মোবাইল সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠক করা হবে বলে জানান পর্যটনমন্ত্রী৷ বছরের বিভিন্ন সময় নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও লোক সংস্কৃতি তুলে ধরারও ব্যবস্থা হবে৷

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন