অর্পিতা ঘোষ। ফাইল চিত্র।
বালুরঘাট আসনে দলের ভরাডুবিতে ফের দক্ষিণ দিনাজপুর তৃণমূলের জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হল বিপ্লব মিত্রকে। তাঁর জায়গায় আনা হল পরাজিত প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে। শনিবার বিকেলে কালীঘাটে এক সাংবাদিক বৈঠকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অর্পিতার হার মানি না। ওকে দক্ষিণ দিনাজপরের দায়িত্ব দেওয়া হল।’’ সোমবার বালুরঘাটে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে এ দিন কলকাতা থেকে ফোনে জানান অর্পিতা।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে বিপ্লবকে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হয়। ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন পূর্তমন্ত্রী, বালুরঘাটের শঙ্কর চক্রবর্তীকে। কিন্তু বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের পরাজয় ঠেকানো যায়নি। জেলার ৬টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪টিতে হারে তৃণমূল। পরে ফের সভাপতির পদে ফেরানো হয় বিপ্লবকে। এ বার তৃণমূলের ভরাডুবিতে ফের বিপ্লবকে সরালেন দলনেত্রী। তবে তৃণমূলের একাংশের অভিযোগ, বারবার সভাপতির পদে এই রদবদল দলের সাংগঠনিক শক্তির পক্ষে বিপুল ক্ষতিকর হবে। পাশাপাশি, নেত্রীর এই পদক্ষেপে বিপ্লবের দলবদলের রাস্তা প্রশস্তই হল বলেও মনে করছেন অনেকে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, এ দিন বৈঠকে মমতা বিপ্লবকে বলেন, তিনি তৃণমূল করতে চান, নাকি বিজেপি করতে চান, তা তাঁকেই স্থির করতে হবে। এই নিয়ে পরে প্রশ্ন করা হলে বিপ্লব অবশ্য বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘‘এ বিষয়ে বলার কিছু নেই। আমার নামে মিথ্যা কথা বলা হয়েছে মমতাকে। আমি নাকি তৃণমূলকে হারিয়েছি! উনি যেটা ভাল বুঝেছেন, করেছেন। উনি হয়তো বুঝেছেন, সভাপতি বদল করে জেলার সংগঠন আরও শক্তিশালী হবে।’’ তিনি আরও জানান, তিনি যদি দলীয় প্রার্থীকে হারিয়ে থাকেন, তা হলে অর্পিতা ৫ লক্ষের উপরে ভোট কী করে পেলেন। বালুরঘাটে প্রার্থী ঘোষণার সময় থেকেই বিপ্লব অনুগামীদের মধ্যে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অর্পিতা-বিরোধী প্রচার শুরু করেন। বিপ্লবের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এই প্রচার তিনি থামানোর চেষ্টা করেননি।
এ দিন মমতার সিদ্ধান্ত শোনার পরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদা বলেন, ‘‘সভাপতি বদলে নতুন করে সংগঠন তৈরি করা কঠিন কাজ। তবে আমরা এ ব্যাপারে চেষ্টা করব।’’ বিপ্লব-ঘনিষ্ঠ এক নেতার কথায়, ‘‘গঙ্গারামপুরে বিজেপি ২২ হাজার ভোট লিড পেল। বালুরঘাটে পেয়েছে ৩৯ হাজার ভোট। তপনে কমেছে ২৩ হাজার ভোট। অথচ বিপ্লবদাকে দায়ী করা হল!’’ বিজেপি জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার জানান, এতে তাঁদের লড়াইয়ে আরও সুবিধা হল।