প্রশিক্ষণে সাড়ে সাত হাজার

কোচবিহারের স্কুলেই মিলছে ছাত্রীদের আত্মরক্ষার পাঠ

একা স্কুলে যাতায়াত বা টিউশন নিয়ে ফিরতেও এখন তেমন ভয় লাগে না ওদের। কারণ নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব ওরা নিয়ে নিয়েছে নিজেরাই। কারণ স্কুলে পড়াশোনার সঙ্গেই তারা পাচ্ছে আত্মরক্ষার পাঠ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৭
Share:

আত্মরক্ষা: ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া চলছে। নিজস্ব চিত্র

একা স্কুলে যাতায়াত বা টিউশন নিয়ে ফিরতেও এখন তেমন ভয় লাগে না ওদের। কারণ নিজেদের নিরাপত্তার দায়িত্ব ওরা নিয়ে নিয়েছে নিজেরাই। কারণ স্কুলে পড়াশোনার সঙ্গেই তারা পাচ্ছে আত্মরক্ষার পাঠ।

Advertisement

একযোগে কোচবিহারের দেড় শতাধিক স্কুলে আত্মরক্ষার পাঠ নিচ্ছে ছাত্রীরা। রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান প্রকল্পে আত্মরক্ষার ওই পাঠক্রমে রয়েছে ক্যারাটে, জুডো ও উসু প্রশিক্ষণ। ওই প্রকল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলগুলির নবম শ্রেণির ছাত্রীরা প্রথম দফার প্রশিক্ষণের আওতায় রয়েছে। গড়ে ৫০ জন করে ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে সাড়ে ৭ হাজারের বেশি ছাত্রীকে পর্যায়ক্রমে জানুয়ারি থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তিন মাস ধরে সকলকেই গড়ে সপ্তাহে দু’দিন প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। প্রথম পর্যায়ের প্রশিক্ষণ পর্ব মে মাসের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। রাস্ট্রীয় মাধ্যমিক অভিযান প্রকল্প দফতরের কোচবিহারের আধিকারিক মহাদেব শৈব বলেন, “ছাত্রীদের আগ্রহের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিতে আত্মরক্ষার বিভিন্ন কৌশল শেখানো দেওয়া হচ্ছে। ভালই সাড়া মিলেছে।”

রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক অভিযান প্রকল্প দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় ওই প্রকল্পের আওতাধীন মোট স্কুলের সংখ্যা ২৪০টি। তার মধ্যে প্রথম দফায় ১৫১টি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রীদের প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হয়েছে। মূলত পথেঘাটে চলাফেরা থেকে দৈনন্দিন জীবনে নানা বিপদের মোকাবিলার কৌশল শেখানো হচ্ছে। এর মাধ্যমেই মেয়েদের আত্মবিশ্বাস বাড়ানোই অন্যতম লক্ষ্য। প্রকল্পে প্রতিটি স্কুলকে গড়ে তিন মাসের প্রশিক্ষণের জন্য ৯ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে বাকি স্কুলের পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণের পরিকল্পনা রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ওই ব্যাপারে প্রস্তাব পাঠানোর বিষয়টিও চূড়ান্ত হয়েছে।

Advertisement

যে সব স্কুলে ওই প্রশিক্ষণ চলছে তার মধ্যে একটি নাটাবাড়ি হাইস্কুল। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিৎ সেন বলেন, “আত্মরক্ষার কৌশল শিখতে উৎসাহীদের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই ৮০ জন ছাত্রীকে আমরা প্রশিক্ষণের আওতায় রেখেছি। সেটাও সপ্তাহে পাঁচদিন করে।” তবে তালিকায় যারা নেই তারাও পিছিয়ে থাকতে রাজি নন। তুফানগঞ্জ মুগাভোগ হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রদীপ ঝা বলেন, “স্কুলের উদ্যোগে আমরাও ছাত্রীদের প্রশিক্ষণ চালু করেছি।”

প্রশিক্ষণ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছাত্রীরাও। তাদের বাবা-মায়েরাও মেয়ে বাড়ির বাইরে গেলে অনেকটা নিশ্চিন্তে থাকছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন