rape

Rape: যন্ত্রণায় সে বারবার বলছে, বাঁচব তো?

শরীরের পঞ্চাশ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া মেয়েটি বিছানায় একভাবে শুয়ে থাকতে পারছে না। এ পাশ ওপাশ করলেও পোড়া চামড়ায় যন্ত্রণা হয়।

Advertisement

, অনির্বাণ রায় ও অর্জুন ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২২ ০৮:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

“আমি বাঁচব তো?” দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে আর্তনাদ পাক খাচ্ছে হাসপাতালের ঘরটায়। তেরো বছরের মেয়েটির হাঁটু থেকে বুক পর্যন্ত গজ কাপড় দিয়ে ব্যান্ডেজ বাঁধা শক্ত করে। পুড়ে যাওয়া চামড়ার জ্বলুনি সহ্য হচ্ছে না আর! গোঙাতে গোঙাতে হাঁফিয়ে যাচ্ছে নাবালিকা। খানিকক্ষণ থামছে গোঙানি। তখন নাক দুটো ফুলে উঠছে মেয়েটির। কেঁপে উঠছে ঠোঁট। শরীরের ভিতরে অনেকটা নিঃশ্বাস টেনে নিচ্ছে সে। আবার আর্তনাদ ছুটে বের হচ্ছে কালো হয়ে যাওয়া মুখ থেকে। সামনে পরিচিত কাউকে দেখলে চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে নামছে। মেয়েটি জানতে চাইছে, “আমি বাঁচব তো?” বিছানা থেকে একটু দূরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন মেয়েটির মা। আঁচলের খুঁট ধরে রেখেছেন নিজের চোখের কোণে। বলছেন, “মেয়েটার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারি না। গত কয়েক মাস ধরে ওর উপর দিয়ে শুধু ঝড় বইছে।”

Advertisement

গত ফেব্রুয়ারি মাসে পড়শি এক যুবক ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল তাকে। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সূত্রের খবর, তার পরে অভিযুক্ত হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন নেয়। অভিযোগ, গত বুধবার দুই যুবক মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেয়, ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ না তুললে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। পরিবারের অভিযোগ, সেই হুমকি শুনে ভয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়েছিল মেয়েটি।

শরীরের পঞ্চাশ শতাংশের বেশি পুড়ে যাওয়া মেয়েটি বিছানায় একভাবে শুয়ে থাকতে পারছে না। এ পাশ ওপাশ করলেও পোড়া চামড়ায় যন্ত্রণা হয়। ব্যথা নিয়েই ছেঁড়া ছেঁড়া কথা বলে চলেছে মেয়েটি। কখনও বলছে, “আমি আরও পড়াশোনা করব।” কখনও বলছে, “আমাকে ভাল করে চিকিৎসা করাও।” আত্মীয় পরিজনদের বলছে, “আরও ওষুধ এনে দাও। ব্যথা কমিয়ে দাও।” ময়নাগুড়ির তৃণমূল ব্লক সভাপতি শিবশঙ্কর দত্ত দেখা করতে গিয়েছিলেন নাবালিকার সঙ্গে। তাঁকে নাবালিকা বলে, “আমি পড়াশোনা করব।” শিবশঙ্কর বলেন, “পড়বি মা, আমারও মেয়ে আছে, দু’জনে একসঙ্গে পড়বি।” নাবালিকার গোঙানি থামে না। সে বলতে থাকে, “আমি উকিল হব। আমি বাঁচব তো!”

Advertisement

নাবালিকার বাবা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। মা কখনও মাঠে, কখনও অন্য কোনও কাজ করেন। ঢালু জমিতে টিনের বেড়ার বাড়ি তাঁদের। বাড়ির সকলেই হাসপাতালে। বাড়ির সামনে পুলিশ পিকেট। মেয়েটির বৃদ্ধা ঠাকুমা বাড়ির দুয়ার আগলে বসে রয়েছেন। উঠোনের এক কোণে পড়ে রয়েছে এক জোড়া চটি, ছোট্ট পায়ের মাপের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন