সর্বদল: তখন সবে শুরু হয়েছে মোর্চার ডাকা বৈঠক। হাজির পাহাড়ের দলগুলি। কালিম্পঙে বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র ।
দলের কট্টরপন্থীদের চাপে ফের বন্ধ শিথিল করার সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসতে হল মোর্চাকে। আর তাতেই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা বেড়েছে মোর্চা নেতৃত্বের।
প্রায় পনেরো দিন হল মোর্চার বন্ধ চলছে। কিন্তু তাতে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও ইতিবাচক সাড়া বিমল গুরুঙ্গরা পাননি। রাজ্য সরকার কড়া অবস্থান থেকে সরেনি। বৃহস্পতিবারও পূর্ব বর্ধমানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার বলেছেন, ‘‘বাংলা ভাগ হবে না, হবে না, হবে না।’’ এ দিন জিটিএ প্রধানের পদে বিমল গুরুঙ্গের ইস্তফাও গ্রহণ করা হয়ে গিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে মোর্চার দাবি নিয়ে সমাধানের আশু যে কোনও আশা নেই, তা মোর্চা নেতারা জানেন। তাই আন্দোলন আরও অনেকদিন টেনে নিয়ে যেতে হবে, সেই প্রস্তুতির উপরে জোর দিয়েছেন। সেই প্রস্তুতিরই অঙ্গ হল, বন্ধ অন্তত দু’দিনের জন্য শিথিল করা। যাতে পাহাড়ে সাধারণ মানুষ ভাঁড়ার ভরে নিতে পারেন। জিএনএলএফ, জাপ নেতাদেরও একই মত।
কিন্তু এ দিন সর্বদল বৈঠকে এক পক্ষ যখন ঘরে টেবিল চাপড়ে সওয়াল করেছেন বন্ধ তোলার পক্ষে তখন আর এক পক্ষ বাইরে লাঠিসোটা-বাটাম নিয়ে দাঁড়িয়ে হুমকি দিয়েছেন, বন্ধ তোলা হলে কাউকে ছাড়বেন না। বেলা ১টা থেকে টানা ৭ ঘণ্টা বৈঠকের পরে মোর্চার কট্টরপন্থীদের চাপে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আপাতত বন্ধ চলবে। এক সপ্তাহ পরে, ৬ জুলাই ফের সর্বদল বৈঠক হবে। সেখানেই পরের পদক্ষেপ ঠিক হবে।
মোর্চা নেতাদের এখন চিন্তা, কট্টরপন্থীদের মত মেনে চলায় পাহাড়ের তাঁদের সমর্থনের ভিত না আরও টলে যায়। এ দিন সন্ধ্যাবেলা বন্ধ শিথিল না করার সিদ্ধান্ত ছড়িয়ে পড়ার পরেই পাহাড়ের গ্রামে শহরে হতাশার খবর মিলেছে। তাঁদের অনেকে এখনও কোনও না কোনও কারণে মোর্চার পাশে থাকলেও, দিনের পর দিন বন্ধ চললে তাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা মোর্চা নেতারা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
আন্দোলনকে দিশা দেওয়ার জন্য এ দিন একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে তার মাত্র দু’জনের নাম জানানো হয়। মোর্চার সহ সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ বলেন, ‘‘আন্দোলন জোরদার করতে অনশনে বসার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ তবে কবে কোথায় অনশন হবে, সে সব জানানো হয়নি।