অনাস্থার গুঞ্জন পুরপ্রধানের বিরুদ্ধেই

পুরসভা নিয়ে দলের অন্দরে কলহ ক্রমশ প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, ক্ষোভ এতটাই যে আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান আশিস দত্তের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার বিষয়ে বাম কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন তৃণমূলের একাধিক কাউন্সিলর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০২:৫৭
Share:

পুরসভা নিয়ে দলের অন্দরে কলহ ক্রমশ প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, ক্ষোভ এতটাই যে আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যান আশিস দত্তের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার বিষয়ে বাম কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন তৃণমূলের একাধিক কাউন্সিলর।

Advertisement

২০ আসনের আলিপুরদুয়ার পুরসভায় তৃণমৃল কাউন্সিলর রয়েছেন ১৩ জন। গত পুরসভা নির্বাচনে বামেরা পেয়েছিল ৮টি আসন। কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছিল ৬টি করে আসন। পুর নির্বাচনের পর চেয়ারম্যান নির্বাচনে কংগ্রেসের ৬ কাউন্সিলর যোগ না দেওয়ায় বোর্ড গঠন করে বামেরা। এক বছর পর কংগ্রেসের ছয় কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। পরে একজন আরএসপি কাউন্সিলরও তৃণমূলে যোগ দেন। ২০১৪-য় তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা ১২ নম্বর ওয়ার্ডের দীপ্ত চট্টোপধ্যায়কে আশ্বাস দেন তাঁকে এক বছর পর চেয়ারম্যান করা হবে। সেই সময় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন আশিস দত্ত।

কিন্তু দুবছর হয়ে গেলেও আশিসবাবু দায়িত্ব না ছাড়ায় কাউন্সিলরদের একাংশ ক্ষুদ্ধ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কাউন্সিলর জানান, রাজ্য নেতৃত্ব চেয়ারম্যান বদলানোর বিষয় একাধিকবার জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। কিন্ত কোনও অজানা কারণে প্রায় একবছর সেই কাজ করতে পারেননি জেলা নেতৃত্ব। তাই অনাস্থার পথে যাওয়ার বিষয় আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা পুরসভার বিরোধী দলনেতা অনিন্দ্য ভৌমিক বলেন, “পরোক্ষে তৃণমূল আমাদের বাম কাউন্সিলরদের সঙ্গে অনাস্থা আনার বিষয় যোগাযোগ শুরু করেছেন। বিষয়টি নিয়ে দলীয় পর্যায় আলোচনা চলছে।”

Advertisement

তৃণমূলের তরফেরও বিষয়টি স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দেবকান্ত বড়ুয়া বলেন, ‘‘দলের ৫-৬ কাউন্সিলর বামেদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছে বলে শুনেছি। চেয়ারম্যান না বদল হওয়ায় দলের অন্দরে অসন্তোষ রয়েছে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের একাধিক কাউন্সিলর জানান, তৃণমূলের ৫ থেকে ৬ জন কাউন্সিলর অনাস্থার পথে যেতে পারেন। বামেদের সাত জন রয়েছেন। বোর্ড গঠনে দরকার ১১ জন।

তাঁদের বক্তব্য, যদি দলীয় কাউন্সিলরেরা বামেদের সঙ্গে মিলে অনাস্থা আনেন তা দলের পক্ষে ভালো হবে না। এ জন্য দলের জেলা নেতাদের একাংশই দায়ী থাকবে। ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তৃণমূলের যুব সভাপতি সমর ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, “বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর বাম কাউন্সিলরদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানিয়েছি।” তবে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

তবে এমন সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক তথা তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “তৃণমূলের কোনও কাউন্সিলর বামেদের সঙ্গে যোগযোগ করেননি। তবে বাম কাউন্সিলররা তৃণমূলে যোগ দেবে বলে আমারা কাছে বার্তা আসছে।” বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি পুর-চেয়ারম্যান আশিস দত্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন