সেই ফ্লেক্স: এটিই সরাতে বলেন গৌতম। নিজস্ব চিত্র
লম্বা ফ্লেক্সে নীল রঙের নেহেরু কোট পরা হাসি মুখের ছবি। শিলিগুড়ি গার্লস স্কুল চত্বরে মূল প্রবেশ পথের দিক মুখ করে লাগানো ফ্লেক্সটি। গেট দিয়ে ঢুকেই প্রথমে সেই ছবিটি চোখে পড়তে বাধ্য। ছবিটা দেখে দাঁড়ালেন মন্ত্রী গৌতম দেব। তাঁরই ছবি। কিছু ক্ষণের মধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হল ফ্লেক্সটি। মন্ত্রীরই নির্দেশে।
তৃণমূল প্রভাবিত সরকারি কর্মী ফেডারেশনের জেলা কনভেনশনের মঞ্চে বক্তৃতার শুরুতেই ছবির প্রসঙ্গ তুলে গৌতম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া অন্য কারও ছবি দিয়ে ফ্লেক্স-হোর্ডিং লাগাবেন না।’’
তৃণমূলের রাজ্য কোর কমিটির বৈঠকে সম্প্রতি সিদ্ধান্ত হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রীর ছবি ছাড়া অন্য কারও ছবি দিয়ে প্রচার হবে না। রবীন্দ্রজয়ন্তী হোক অথবা ভোটের প্রচার, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ হোক অথবা দলের বুথ সম্মেলন— সব প্রচারেই মুখ্যমন্ত্রীর ছবি থাকে। পাশে হাসি মুখে স্থানীয় কোনও নেতার ছবি। এমন কোনও ক্ষেত্রেই আর ছবি দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে তৃণমূলের কোর কমিটি। রবিবার গৌতমবাবু দলের নেতা-কর্মীদের স্পষ্ট জানিয়েও দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের সকলের নেত্রী। তাই তাঁর ছবিই থাকবে। আমার কোনও ছবি আপনারা কোথাও টাঙাবেন না।’’
দলের নির্দেশ অমান্য করলে শাস্তি পেতে হবেও বলেও জানানো হয়েছে। তৃণমূল অন্দরের খবর, সংগঠনে গুরুত্ব বাড়াতে একই ফ্লেক্সে মুখ্যমন্ত্রীর এবং নিজের ছবি ছাপার প্রবণতা রয়েছে অনেকের। এক নেতার কথায়, ‘‘ধরা যাক কোনও কাউন্সিলর বা দলের শাখা সংগঠনের বুথ সভাপতি। তিনিও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি ছাপিয়ে ফ্লেক্স লাগান। এতে সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে নিজের ওজনও বাড়ানো যায়।’’ এমন প্রবণতায় দলেরই ক্ষতি বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের। তাই কোর কমিটির কড়া সিদ্ধান্ত। আগামী পঞ্চায়েত ভোটে কি ধরনের হোর্ডিং-ফ্লেক্স লাগানো হবে, তা নিয়ে তৃণমূল ভবন থেকেই নির্দেশ আসবেন। দলের স্থানীয় কর্মসূচিতে মুখ্যমন্ত্রী ছবি ছাপতে গেলেও জেলা নেতৃত্বের থেকে অনুমতি নিতে হবে এখন থেকে।