এখানেই এ বার দেখা মিলবে প্রজাপতিরও। — নিজস্ব চিত্র
অফ সিজনে পর্যটক টানতে রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষী নিবাসে প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র ও প্রজাপতি পার্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। সেই সঙ্গে, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের স্বার্থে পক্ষীনিবাসের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়নেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া থানার সোনাপুরে উত্তর, দক্ষিণ ও মালদহ জেলার পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বন দফতরের কর্তাদের কাছ থেকে পক্ষী নিবাসের বর্তমান পরিস্থিতি ও সার্বিক পরিকাঠামো সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী ওই বৈঠকে অফ সিজনে পর্যটক টানতে পক্ষী নিবাসে প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র ও প্রজাপতি পার্ক তৈরি সহ পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং স্বাচ্ছন্দ্যের স্বার্থে পক্ষী নিবাসের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়নের সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, রায়গঞ্জের কুলিক পক্ষী নিবাসের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়ন ও নতুন অনেক কিছু চালু করে পর্যটনশিল্প গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের বিভাগীয় বনাধিকারিক দ্বিপর্ণ দত্তের দাবি, অফ সিজনে পর্যটক টানতেই মুখ্যমন্ত্রী কুলিক পক্ষী নিবাসে প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র ও প্রজাপতি পার্ক গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। পাশাপাশি, পক্ষী নিবাসের পরিকাঠামোগত সমস্যার কথা জানার পরেই মুখ্যমন্ত্রী পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের স্বার্থে পক্ষী নিবাসের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়নের কথা ঘোষণা করেন। দ্বিপর্ণবাবু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বন দফতর সমস্ত কাজের প্ল্যান ও এস্টিমেট তৈরি করে আগামী তিন মাসের মধ্যে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের কাছে জমা করবে। তারপরেই সরকারের তরফে টাকা বরাদ্দ ও টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু হবে।’’
প্রতি বছর মে থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অন সিজনে পক্ষী নিবাসে নাইট হেরন, করমোন্যান্ট, ওপেন বিলস্টক সহ বিভিন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি আসে। ফলে ওই আট মাস উত্তরবঙ্গ সহ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা ও সংলগ্ন বিহার থেকে বহু পর্যটক পক্ষী নিবাসে ভিড় জমালেও বাকি চার মাস অফ সিজনে পর্যটকদের দেখা মেলে না। বন দফতরের দাবি, সরকারি নির্দেশে অফ সিজনে পর্যটকদের টানতে পক্ষী নিবাসের ক্যানালে কচ্ছপ সংরক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, নীলগাই, হরিণ, খরগোস, সাপ সহ বিভিন্ন প্রাণীদের সংরক্ষণ কেন্দ্রও গড়ে তোলা হবে। পক্ষী নিবাসের একাংশে বিভিন্ন ফুলচাষ করে প্রজাপতি পার্ক তৈরি করা হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা ও স্বাচ্ছন্দ্যের স্বার্থে চত্বরে সীমানা পাঁচিল, রাস্তা, বিশ্রামাগার ও বসার পরিকাঠামো, নজরমিনার তৈরি সহ পানীয় জল এবং শৌচাগারের পরিকাঠামো উন্নয়ন করা হবে।