গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মালদহে

দলীয় কর্মীদের আচারণে ক্ষুব্ধ হয়ে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জয়া। এমনকী, দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ অন্যায় কাজ করলে পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৭ ০৪:১৬
Share:

সংঘর্ষ: মালদহে দলীয় সভায় হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন টিএমসিপি সদস্যরা। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের প্রস্তুতি সভাকে ঘিরে দফায় দফায় দু’গোষ্ঠীর সংঘর্ষকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াল মালদহে। বুধবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্তের উপস্থিতিতেই দু’গোষ্ঠীর মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় আহত হন বেশ কয়েকজন। ঘটনাস্থলে ইংরেজবাজার থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তারপরে পুলিশের উপস্থিতিতেই মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রস্তুতি সভা।

Advertisement

দলীয় কর্মীদের আচারণে ক্ষুব্ধ হয়ে কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জয়া। এমনকী, দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ অন্যায় কাজ করলে পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং মেলে করে মালদহে পৌঁছন জয়া। মালদহ টাউন স্টেশনেই তাঁকে স্বাগত জানাতে গিয়ে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মালদহের দু’গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরা। অভিযোগ, নেত্রীকে কোন গোষ্ঠী স্বাগত জানাবে, তা নিয়েই দ্বন্দ্ব শুরু হয়। স্টেশনেই শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি। যদিও রেল পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ দিনের সভা শুরু থেকেই চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয় কলেজ অডিটোরিয়ামে। দুপুর ১টা থেকে সভা শুরু হলেও আড়াইটে নাগাদ সভায় যোগ দেন জয়া।

Advertisement

সভা চলাকালীনই যুব তৃণমূলের জেলার সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মণ্ডল মঞ্চেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সভামঞ্চের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকার সময় দলেরই সংগঠনের ছেলে তাঁকে মারধর করেছে। পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বিশ্বজিৎকে বুঝিয়ে সভামঞ্চ থেকে সরিয়ে দেন। বাইরে ফের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এমনকী, রাস্তাতেও দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

সম্প্রতি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের জেলা সভাপতি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় কৃষ্ণেন্দু ঘনিষ্ঠ তথা কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ দাসকে। তাঁর পরিবর্তে রাজ্য নেতৃত্ব দায়িত্ব দেন প্রসূন রায়কে। প্রসূন যুব তৃণমূলের সভাপতি অম্লান ভাদুড়ি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। দু’জনের অনুগামীদের মধ্যে রাত থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফায় হাতাহাতি, সংঘর্ষ হয়। যদিও এ ক্ষেত্রে দলের কোনও বিষয় নেই বলে সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেছেন জয়া দত্ত।

তিনি বলেন, সিপিএম ও কংগ্রেসের কিছু বেনো জল আমাদের দলে ঢুকে পড়েছে। সেই বেনো জলদের চিহ্নিত করে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে কেউ অন্যায় কাজ কিংবা টাকা তুললে তা বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতায় সেই নেতা-কর্মীদের পদক্ষেপ করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জয়া। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠাতা দিবসের পরে সেপ্টেম্বরে ছাত্র সংগঠনের মালদহ নেতৃত্বকে নিয়ে পৃথক ভাবে বৈঠক করে সমস্যা মেটানো হবে ২৮ অগস্ট। যদিও রাজ্য নেতৃত্বের সুরেই সুর মিলিয়ে প্রসূন, প্রসেনজিৎ ও অম্লানবাবুরা বলেন, ‘‘দ্বন্দ্বের কোনও বিষয় নেই। ঐক্যবদ্ধ ভাবে আমরা কাজ করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন