কেরলে নিপা (এনআইভি) ভাইরাসের হানায় মৃত্যুর খবরে উদ্বেগ ছড়িয়েছে এই রাজ্যেও। কেরল থেকে আসা লোকজনকে পরীক্ষা করাও হচ্ছে গোয়াতে। এ রাজ্যে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলোতে কেরল থেকে আসা প্রশিক্ষিত নার্সরা বেশ ভাল সংখ্যায় কাজ করেন। তা নিয়েই উদ্বেগ ছড়িয়েছে। নার্সিংহোমগুলোকে সে ব্যাপারে নজর রাখতে সতর্ক করতে উদ্যোগী রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তা ছাড়া অনেকে কেরলে বিভিন্ন নির্মাণ সংস্থার হয়ে শ্রমিকের কাজে যান। তাঁদের রোগ বিষয়ে সতর্ক করা, সচেতন করা এবং পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি সামনে এসেছে।
রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর বিষয়টি নিয়ে ভাবছে। স্বাস্থ্য অধিকর্তার দফতর থেকে তা নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা নিচ্ছে।’’
এ রাজ্যে ২০০১ সালে জ্বরে অনেকের মৃত্যু ঘটেছিল শিলিগুড়িতে। শহরের দুই চিকিৎসক-সহ নার্সদের কয়েক জন মারা যান। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রথমে ভাইরাস চিহ্নিত করা যায়নি। অজানা জ্বরে মৃত্যু বলেই ধরা হয়। পরে জানা যায় তা নিপা ভাইরাস ছিল। পরে নদিয়াতে একবার ৫ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। সে কারণে কেরলের ঘটনা নিয়ে সর্তক দার্জিলিং জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘শহরের বিভিন্ন নার্সিংহোমগুলোকে এই ভাইরাসের সংক্রমণের সম্ভাবনা নিয়ে সচেতন করতে শুরু করা হয়েছে। আমরা নজর রাখছি।’’
শিলিগুড়িতে সংক্রমণের সময় শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের সুপার পদে ছিলেন বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের ডেপুটি সুপার বিজয় থাপা। তিনি বলেন, ‘‘নিপা ভাইরাসের সংক্রমণে ওই বছর অনেকেই মারা গিয়েছিল শিলিগুড়িতে। তখন জানা না গেলেও পরে জানা গিয়েছে নিপা ভাইরাসের সংক্রমণেই তাঁদের অনেকে মারা গিয়েছে।’’ স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সেবক রোডের একটি নার্সিংহোম থেকে ৫ জন সে সময় অজানা জ্বর নিয়ে মারা গিয়েছিল। প্রথমে কর্তৃপক্ষ না জানালেও একগুলো মৃত্যুর পর তাঁরা স্বাস্থ্য দফতরকে জানায়। ভাইরাসের সংক্রমণে তখন অজানা জ্বরের প্রকোপে আতঙ্কে শিলিগুড়ি ছাড়তে শুরু করেছিল বাসিন্দারা।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অরুণাভ সরকার জানান, বাদুড়ের লালা, মল, মূত্রে এই ভাইরাস থাকে। সে কারণে বাদুড়ের উৎপাত রয়েছে এমন এলাকার ফল, খেজুরের রস খাওয়া থেকে সর্তক হতে হবে। তা ছাড়া উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় গত পাঁচ বছর ধরে অ্যাকিউট এনসেফ্যালাইটিস সংক্রমণ
শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে জ্বরে আক্রান্ত রোগীর রক্তের নমুনা বাইরেও পাঠানো হচ্ছে।