মালদহের বীরনগরে শতাধিক বাড়ি চলে গিয়েছে নদীগর্ভে। এমন বহু বাড়িই গ্রাস করে নিয়েছে গঙ্গা। সোমবার ছবিটি তুলেছেন মনোজ মুখোপাধ্যায়।
ফি বছরের মতো এ বারও বর্ষার ভাঙনে বিপর্যস্ত মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকা। ইতিমধ্যে নদীগর্ভে চলে গিয়েছে প্রায় দেড় শতাধিক বাড়ি। কয়েকশো বিঘা চাষের জমিও জলের তলায়। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন বীননগরের সরকার টোলা, চিনাবাজার, রবিদাস টোলা ও পারদেওনাপুরের পারলালপুর গ্রামের বাসিন্দারা।
সপ্তাহখানেক আগে বৈষ্ণবনগরের বিজেপির বিধায়ক স্বাধীন সরকারের বাড়ি ভাঙনের কবলে পড়ে। সোমবার রাতে ভাঙনের কবলে পড়ে বীননগর গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান ডলি মন্ডলের বাড়িরও। ডলি দেবী বলেন, ‘‘গ্রামের ৫০টি পরিবার গৃহহীন। প্রশাসনের উদাসীনতার জন্যই এই পরিস্থিতি।’’
গত রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৬০ বাড়ি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। ব্লক সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে পারদেওনাপুরের প্রধানমন্ত্রীর গ্রাম সড়ক যোজনার রাস্তাও। মানিকচক ব্লকের জোটপাট্টা, রবিদাস পাড়া, দাল্লুটোলা, রামনগর গ্রামের হাজার হাজার মানুষ বন্যার জলে প্লাবিত হয়ে রয়েছে। একই সঙ্গে নারায়ণপুর চরেও ২০০ মিটার অংশে ভাঙন হয়েছে। ফলে ভাঙন ও বন্যা নিয়ে জেরবার হয়ে উঠেছে গ্রামগুলির বাসিন্দারা।
মালদহের গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অরুণ রজক বলেন, ‘‘প্রতি বছরই জেলার মানিকচক, কালিয়াচকের বিস্তীর্ণ এলাকায় ভাঙন হয়। ভাঙনের সময় কর্তৃপক্ষ কাজ করে। তবে শুখা মরসুমে কোনও কাজ হয় না। তাই জেলাতে ভাঙন ফি বছরের সমস্যা হয়ে উঠেছে।’’
ভাঙন রুখতে প্রশাসন কেন তৎপর নয়, এর জবাবে সেচ দফতরের মালদহ ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অমরেশকুমার সিংহ বলেন, ‘‘বিষয়টি মূলত ফরাক্কা ব্যারেজের অধীনে। আমরাও নজর রাখছি।’’ জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী বলেন, ‘‘ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
মালদহের মতোই ভাঙনের সমস্যা তীব্র হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের ইটাহার, ইসলামপুর, চোপড়া ও চাকুলিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকায়। ইটাহার থানার খরস্রোতা গ্রামে দু’সপ্তাহ আগে সুঁই নদীর পারের প্রায় ৮০০ মিটার এলাকায় ভাঙন হয়। ইসলামপুর ও চোপড়া থানার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় নাগর নদীর ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে বিঘের পর বিঘে। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক আয়েশা রানি সমস্যা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।