হাইকোর্টের নির্দেশে জেলাপরিষদে বিরোধীদের ডাকা তলবি সভা স্থগিত থাকল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জেলাপরিষদ ভবনে ছিল চাপা উত্তেজনা। এ দিন বিরোধীদের তলবি সভায় বিরোধীদের সঙ্গে বসে থাকতে দেখা যায় তৃণমূলের এক জেলা পরিষদ সদস্যকেও। আবার সিপিএমের এক সদস্য এ দিন সভায় উপস্থিত হননি। জুনে জেলাপরিষদ সভাধিপতি মোহন শর্মার বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে সিপিএম, আরএসপি বিজেপি ও গোর্খাজনমুক্তি মোর্চার সদস্যরা।
জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট আঠারোটি আসনের মধ্যে তৃণমূলের ছিল দশটি। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা বাইরে থেকে সমর্থন করেছিল। পরে তৃণমূল থেকে বেরিয়ে যান সহ সভাধিপতি অতুল সুব্বা। তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। মোর্চার সদস্যও সমর্থন তুলে নেন। ন’জন বিরোধী মিলে সভাধিপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে। তবে প্রশাসন সভা না ডাকায় চলতি মাসে বিরোধীরা তলবি সভা ডাকে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক পালদেন শেরপা বলেন, ‘‘হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ এসেছে। তা বিরোধীদের জানানো হয়েছে।’’
বিরোধী বিজেপির অতুল সুব্বা জানান, আমাদের সঙ্গে তৃণমূলের এক সদস্য উপস্থিত ছিলেন তলবি সভায়। তবে সিপিএমের এক সদস্যকে তৃণমূল আটকে রাখায় তিনি আসতে পারেনি। এদিন হাইকোটের্র স্থগিতাদেশ বিষয় জেনেছি। আমরাও কোর্টের দ্বারস্থ হব।
আরএসপি-র সুব্রত রায় জানান, ‘‘আঠারো সদস্যের মধ্যে বিরোধী নয় জনের সঙ্গে তৃণমূলের একজন আসায় আমার দশ জন হয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলাম। তবে সিপিএমের এক সদস্যকে তৃণমূল চক্রান্ত করে আটকে রাখে।’’
বিরোধী দলনেত্রী শুক্লা ব্রহ্ম ঘোষ জানান, ‘‘জেলাপরিষদ সভাধিপতি নিয়ম মানছেন না। কোনও মিটিং হচ্ছে না। কোনও উন্নয়ন হচ্ছে না।’’ সিপিমের জেলা কমিটির সদস্য কিশোর দাস জানান, ‘‘আমাদের সিপিএমের জেলাপরিষদ সদস্য মোহিম রায়কে অপহরণ করা হয়েছে বলে আমরা মনে করছি। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়েছে।’’
তৃণমূলের জেলা সভাধিপতি মোহন শর্মা জানান, মোর্চা, বিজেপি সিপিএম ও আরএসপিকে সঙ্গে নিয়ে বিরোধীরা চক্রান্ত করছে। তিনি বলেন, ‘‘তবে আমার বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ নেই। তা ছাড়া এই তলবি সভায় নিয়ম মেনে হয়নি। তৃণমূলের যে সদস্য বিরোধীদের সঙ্গে গিয়েছেন তার বিরুদ্ধে আগে দলে নানা অভিযোগ ছিল। সিপিএমের সদস্য কেন আসেনি, তা আমাদের জানা নেই। তবে অপহরণের যে অভিযোগ উঠছে তা প্রমাণ হলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’’
তৃণমূলের জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ রোশনি বাগুয়ার জানান, অনিয়মের বিরুদ্ধে বিরোধীদের সমর্থন করেছেন। তবে সিপিএমের জেলাপরিষদের সদস্য মোহিম রায়ের স্ত্রী জয়শ্রী রায় জানান, ‘‘বুধবার সকালে বাড়ি থেকে স্কুলে যাবে বলে বেড়িয়েছিল। তাঁরা সমস্ত আত্মীয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। যদি উনি কোথাও গিয়ে থাকেন।’’ প্রয়োজন বুঝলে থানায় অভিযোগ করবে পরিবার।