ইদের আগে বনধ শিথিল হোক, চাইছেন দার্জিলিং শহরের বাসিন্দাদের অনেকেই। টানা সাতদিন পেরিয়ে বন্ধ চলতে থাকায় অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভেবেই শঙ্কিত কাপড়ের দোকানের ব্যবসায়ী কৃষ্ণ শাহ, সেলাইয়ের দোকানদার মহম্মদ অসীম, গৃহবধূ মঞ্জু রজকেরা, সকলেই। তার উপর আগের দিন সর্বদল বৈঠকের পর সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে বন্ধ চলতে থাকবে। যতদিন না শহর থেকে সেনা, অতিরিক্ত পুলিশ প্রত্যাহার করা হয়। তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে সকলের।
বুধবার সকালে চকবাজারে দাঁড়িয়ে সেই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন অনেকেই। আগামী ২৪ জুন ফের মোর্চার তরফে সর্বদল বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে বন্ধ শিথিলের কথা বিবেচনা করা হলেই ভাল বলে তাঁদের অনেকেই মত প্রকাশ করেছেন। এ দিন মোর্চার তরফে চকবাজার, চৌরাস্তা-সহ বিভিন্ন জায়গায় মিছিল হয়। চকবাজারে জমায়েত করেন মোর্চার সমর্থকেরা। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে স্লোগান দেন। মিছিল হয় সোনাদা, কার্শিয়াং-সহ বিভিন্ন জায়গাতেও।
মঙ্গলবার সর্বদল বৈঠকের পর এ দিন জেলাশাসকের দফতর থেকে দার্জিলিং কলেজ সর্বত্রই বাসিন্দারা একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। দার্জিলিং কলেজের ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে কয়েকজন শিক্ষক নিজেদের মধ্যে বলছিলেন, ‘‘বাড়িতে যা রয়েছে তাতে আর দিন কয়েক চলবে। তার পরও বন্ধ চলতে থাকলে খুবই বিপদের কারণ হবে।’’ বুধবার সিংমারি এলাকায় একটি গ্যাসের ডিলারের দোকানে ভিড় করেন বাসিন্দাদের অনেকেই। তাঁদের দাবি, গত ১৮, ১৯ মে গ্যাস নিয়েছেন। তা ফুরিয়েছে কয়েকদিন আগেই। এখন গ্যাস না পেলে বিপাকে পড়বেন। বারবার বলার পর সিলিন্ডার সরবরাহকারী অফিসের তরফে জানানো হয় ১২ মে’র আগে যারা গ্যাস পেয়েছেন তাঁদের এখন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। বাকিদের দেওয়া যাবে না। জেলাশাসকের দফতরের এক কর্মীর কথায় বাড়িতে মাসের শুরুতে চাল, ডাল কেনা হয়েছিল তাই রক্ষে। এই কটা দিন চালাতে পেরেছি। তবে এর পরও বন্ধ চলতে থাকলে সমস্যা সামাল দেওয়া মুশকিল হবে।
শহরের এক গৃহবধূ মঞ্জু রজক বলছিলেন, ‘‘শুধু খাবারই নয়, পানীয় জল, রান্নার গ্যাস বন্ধের জেরে সবেতেই সমস্যা।’’ ছেলেমেয়েদের স্কুল, কলেজ নিয়ে অনেকে চিন্তায় পড়েছেন। কৃষ্ণবাবু জানান, ব্যবসার জন্য তিনি দু-দশক ধরে এই শহরে রয়েছেন। লাগাতার বন্ধে জেরে এখন কী করবেন বুঝতে পারছেন না।