রানার্স আপের ট্রফি নিচ্ছে শিলিগুড়ি। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
আন্তঃ জেলা সাব জুনিয়র নক আউট ফুটবলে রাজ্য চ্যাম্পিয়ন হল হুগলি। রবিবার ফাইনালে শিলিগুড়িকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেরার শিরোপা দখল করল তারা।
শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে তুমুল বৃষ্টির মধ্যেই চলে খেলা। যোগ্য দল হিসেবে জয়ী হলেও এ দিন জয় পেতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে হুগলিকে। সে কারণে জিতলেও খেলার শেষে দলের স্ট্রাইকাররা এ দিন বারবার গোল করতে ব্যর্থ হওয়ায় তা নিয়ে সমালোচনাও করেছেন হুগলির কোচ দেবু বিশ্বাস। কারণ ফাইনালে তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠে শিলিগুড়ির গোলরক্ষক। হুগলির ফরওয়ার্ডের আক্রমণ শিলিগুড়ি গোলরক্ষকের দস্তানায় বারবার আটকে গিয়েছে। আর একটু হলেই জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হতে বসেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে খেলা না গড়ানোয় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন সকলেই। খেলার শেষে কোচ স্বীকারও করেছেন সে কথা। তিনি বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির গোলরক্ষকের কাছে প্রায় আটকেই গিয়েছিলাম আমরা। তবে ছেলেদের কৃতিত্ব দেব শেষ পর্যন্ত ব্যাপক চাপের মধ্যেও জয় বের করে আনতে পেরেছে।’’ শিলিগুড়ির কোচ সঞ্জীব দেবও হুগলিকে যোগ্য দল বলেই মেনে নিয়েছেন।
দূর্বা ঘাসের মাঠে খেলতে অভ্যস্ত হুগলির ছেলেরা এদিন প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে ম্যাচের দখল নিজেদের হাতেই রেখেছে আগাগোড়া। এমনকী সেমিফাইনাল পর্যন্ত মেদিনীপুরে খেলে ফাইনালে তাদের শিলিগুড়িতে খেলতে আসতে হয়েছে। অনভ্যস্ত পরিবেশ, অচেনা মাঠ, তার উপর প্রবল বৃষ্টি। কাঞ্চনজঙ্ঘার মাঠে অভ্যস্ত না হওয়ায় বারবার পা পিছলে যাচ্ছিল। বল এগোচ্ছিল না। ভিজে বুট ভারী হয়ে আসছে। তার মধ্যেই এদিন হুগলির ছেলেরা পরিণত ফুটবল উপহার দিয়েছে। বৃষ্টির মধ্যে এমনিতেই দর্শক সংখ্যা ছিল হাতে গোনা। যা ছিল তারা সবই শিলিগুড়ির হয়ে গলা ফাটিয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। খেলার শুরু থেকেই বল নিজেদের দখলে রাখার দিকে মনোযোগ দেয় হুগলি। ছোট ছোট পাস, আর মাথার উপরে দিয়ে লম্বা লুপ খেলে বাজিমাত করে তারা।
শিলিগুড়ির ছেলেরা ভাল খেলার চেষ্টা করেও পেশাদার ফুটবলের সামনে খেই হারিয়ে ফেলে। দু’দলের খেলার মধ্যে পার্থক্যও ছিল স্পষ্ট। ম্যাচে হুগলির একচেটিয়া আধিপত্য সত্বেও শিলিগুড়ির পক্ষে খেলা ‘ইনজুরি টাইম’ পর্যন্ত গোলশূণ্য রাখার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ইনজুরি টাইম শুরুর মুখে সকলে ধরেই নিয়েছে খেলা গড়াচ্ছে টাইব্রেকারে। ততক্ষণে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও হুগলি কোচের কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম বোঝা যাচ্ছে স্পষ্ট। কেন না শিলিগুড়ির গোলরক্ষক ততক্ষণে একা কুম্ভ হয়ে লড়ছে। আর ঠিক তখনই শেষ মুহূর্তে নিজেদের ভুলে গোল খেয়ে বসে শিলিগুড়ি। নিজেদের মধ্যে পাস খেলে গোলের জন্য বল বাড়িয়ে দিয়েছে হুগলির বিষ্ণু মণ্ডল। বিপক্ষের গোলরক্ষকের কিছু করার ছিল না। শেষ মুহূর্তে ওই গোল খেয়ে ভেঙে পড়ে শিলিগুড়ি। সেই সুযোগে খেলা শেষ হওয়ার কয়েক সেকেন্ড আগে দ্বিতীয় গোলটি করে সঞ্জীব মণ্ডল। এ ক্ষেত্রে গোলরক্ষক প্রতিরোধের চেষ্টাই করেনি। কারণ ম্যাচের ভবিতব্য তখন ঠিক হয়ে গিয়েছে যে। ম্যাচের সেরা বেছে নেওয়া হয় হুগলির রাজু মুর্মূকে।