শোকার্ত: মৃত শিশু কোলে ভেঙে পড়েছেন পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র
চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে তুলকালাম বাধল নকশালবাড়ি হাসপাতালে। সোমবার বেলা দেড়টা নাগাদ ওই ঘটনায় চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগও উঠেছে। রোগীর পরিবারের তরফে পুলিশে অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে ওই চিকিৎসকের নামে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত শিশুর নাম ঊষা সিংহ (৫)। বাড়ি নকশালবাড়ির পশ্চিম বাবুপাড়া এলাকায়।
তিন দিন ধরে জ্বর সারছে না বলে এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ ওই শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বেলা একটা নাগাদ তাকে স্যালাইনও দেওয়া হয়। এর পরেই শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে বলে অভিযোগ। চিকিৎসককে খবর দিলে তিনি এসে জানান শিশুটি মারা গিয়েছে। এর পরেই রোগীর পরিবারের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে।
অভিযোগ, উত্তেজিত বাসিন্দারা এ দিন হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে নার্সদের ঘরে ফাইলপত্র ছুড়ে ফেলে। ভাঙচুরের সময় ওয়ার্ডে রাখা অক্সিজেন সিলিন্ডারের মুখ খুলে গেলে আতঙ্কে রোগীরা ওয়ার্ড থেকে বেরিয়ে আসেন। চিকিৎসককে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে দার্জিলিং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস থানায় জানান। এর পর পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।’’
রোগীর পরিবারের অভিযোগ, তিন দিন আগেই হাসপাতালের বহির্বিভাগে ওই শিশুকে চিকিৎসা করাতে আনা হয়েছিল। শিশুটির পরিস্থিতি খারাপ হলে চিকিৎসক তাকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে রেফার করতে পারতেন। অথচ তিনি তা করেননি। মৃত শিশুর বাবা লালু সিংহ বলেন, ‘‘হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা না মেলার জন্যই আমার বাচ্চাকে হারাতে হল।’’ তবে চিকিৎসককে মারধর করা হয়নি বলে দাবি করেন রোগীর লোকেরা।
অভিযুক্ত চিকিৎসক সঞ্জয় দাস জানান, হাসপাতালের তরফে সমস্ত ব্যবস্থাই নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে ওষুধও দেওয়া হয়। পরে শিশুটির অবস্থা অবনতি হয়েছে বলে তাঁকে খবর দিলে তিনি গিয়ে দেখেন শিশুটি মারা গিয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আজ আমাকে চড় মারা হয়েছে। পরিশ্রম করে কাজ করার পরেও এ ধরনের ব্যবহার কাম্য নয়। চিরকাল চিকিৎসকেরা মার খাচ্ছেন। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হওয়া দরকার।’’
এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান রাধাগোবিন্দ ঘোষ বলেন, ‘‘হাসপাতালে শিশু বিশেষজ্ঞ নেই। অব্যবস্থার মধ্যে রোগীরা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না তা স্পষ্ট।’’