একটি সংস্থার নাম করে দফতর খুলে চাকরি দেওয়ার নাম করে চলছে প্রতারণা। শিলিগুড়ি শহরে এমনই এক প্রতারক চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। গত দু’মাসে শিলিগুড়ি কমিশনারেটের বিভিন্ন থানা, ফাঁড়িতে এরকম একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে।
এরপরেই তদন্তে নামে পুলিশ। কমিশনারেটের গোয়েন্দা শাখার তরফেও আলাদা করে খোঁজখবর শুরু করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, কখনও বিমান সংস্থার চাকরি, কখনও বহুজাতিক নির্মাণ সংস্থা বা কখনও রেলে চাকরির কথা বলে ওই প্রতারণার ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে দফতরের ভুয়ো ঠিকানা মিলেছে। তেমনিই, অভিযুক্তের মোবাইল ফোনেরও আর খোঁজ মেলেনি। একটি টিভি শো’র কথা বলে এক তৃণমূল নেতার কাছ থেকে প্রায় তিনলক্ষ টাকা প্রতারণায় অভিযুক্ত এক যুবককে সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে ধরেছে সিআইডি।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘এই ধরনের প্রতারকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিললেই খোঁজখবর শুরু হয়। আমরা বিভিন্ন থানাকে নজরদারি রাখতে বলেছি। চাকরি প্রার্থীদেরও সতর্ক হতে হবে। কয়েকদিনের পরিচয় বা টাকার বিনিয়মে বড় চাকরি মেলে না তা তাঁদের বুঝতে হবে।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, শহরের মূল এলাকার বাইরে সাধারণত অলিগলিতে ওই ধরনের চাকরি দেওয়ার নাম করে অফিসগুলো খোলা হয়। ২-৩ মাসের জন্য ভাড়া নিয়ে খোলার পরেই কাজ হাসিল করে অফিসে তালা দিয়ে অভিযুক্তরা পালায়।
কয়েকদিন আগে দুই যুবক পুলিশে অভিযোগ করে জানান, বিমান সংস্থার চাকরির কথা বলে দেশবন্ধুপাড়ার বাসিন্দা এক ব্যক্তি লক্ষাধিক টাকা হাতিয়েছে। যুবকদের টোপ দিয়ে বিমানে দিল্লি নিয়ে গিয়ে ভুয়ো দফতরে ইন্টারিভিউ-র ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। আবার মাটিগাড়ার এলাকার এক যুবককে বিখ্যাত নির্মাণ সংস্থায় চাকরির ভুয়ো নথি দেখিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে দু’জনের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তরা এখনও পলাতক। শিলিগুড়ি থানায় গত সপ্তাহে এক যুবক অভিযোগ করেন, জব কনসালটেন্সির কথা বলে তাঁর কাছ থেকে একটি সংস্থা ৬০ হাজার টাকা নিয়েছে।
কমিশনারেটের গোয়েন্দা শাখার কয়েকজন অফিসার জানান, ওই ধরণের ভুয়ো সংস্থাগুলোর মূল লক্ষ্য পাহাড় এবং চা বাগান এলাকার অভাবী পরিবারের ছেলেমেয়েরা। বিভিন্ন কথার ছলে ভুলিয়ে টাকা আদায়ের পর পালাচ্ছে তারা। সম্প্রতি তদন্তে নেমে তিনজনের খোঁজ মেলে। তবে বাকি অভিযুক্তরা এখনও অধরা।