National Human Rights Commission

‘সন্ত্রাস’ খুঁজে দেখল কমিশন

তুফানগঞ্জের চিলাখানায় ভোটের পরে মৃত তৃণমূল কর্মী সাহানুর রহমানের বাড়িতেও যান কমিশনের সদস্যরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২১ ০৬:৫২
Share:

পরিদর্শন: তুফানগঞ্জের গ্রামে ঘুরছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের গন্তব্য তালিকায় রইল পাঠানটুলি। রইল না জোরপাটকি। যা দেখার পরে তৃণমূলের তরফে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিজেপির পাল্টা দাবি, নিরপেক্ষ বলেই কমিশনের সদস্যরা তুফানগঞ্জে নিহত তৃণমূল কর্মীর বাড়িতেও গিয়েছেন।

Advertisement

বৃহস্পতিবারই কমিশনের প্রতিনিধিদলটি কোচবিহারে আসে। শুক্রবার তাঁরা একের পর এক গ্রাম চষে বেড়ালেন। দু’টি দলে ভাগ হয়ে তুফানগঞ্জ ও শীতলখুচি এলাকায় যান তাঁরা। শীতলখুচির জোড়পাটকিতে ভোটের দিন সিআইএসএফের গুলিতে চার জনের মৃত্যু হয়। ওই দিনই পাঠানটুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বিজেপি কর্মী আনন্দ বর্মণ। পরে আনন্দের পরিবারকে রাজ্যের শাসক শিবিরে পাওয়া যায়। এ দিন আনন্দের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাননি কমিশনের সদস্যরা। শীতলখুচিতেই ভোটের পরে মৃত ধীরেন বর্মণের বাড়িতেও যান তাঁরা। তাঁর মেয়ে পল্লবী বর্মণের সঙ্গে কথাও বলেন। পল্লবী বলেন, ‘‘আমাকে বাবার মৃত্যু নিয়ে অনেক কথা জিজ্ঞেস করা হয়। জানতে চাওয়া হয়, আমরা সিবিআই তদন্ত চাই কিনা। আমরা জানিয়েছি, চাই।’’ শীতলখুচিতেই নওদাবাস এলাকায় গুলিবিদ্ধ মৃত্যু হয়েছিল মানিক মৈত্রের। তাঁর বাড়িতেও গিয়েছিল কমিশন। শনিবার তাঁরা জোরপাটকিতেও যেতে পারেন বলে সূত্রের খবর।

তুফানগঞ্জের চিলাখানায় ভোটের পরে মৃত তৃণমূল কর্মী সাহানুর রহমানের বাড়িতেও যান কমিশনের সদস্যরা। বিজেপির বিরুদ্ধে সাহানুরকে খুনের অভিযোগ রয়েছে। তাঁর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন। বারোকোদালি-১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ মণ্ডলের বাড়িতেও যান কমিশনের সদস্যরা। প্রসেনজিৎ আলিপুরদুয়ারে কনস্টেবল ছিলেন। ২৪ মে তিনি বাড়ি যান। সন্ধ্যায় বাইক নিয়ে হরিপুর এলাকায় গেলে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর মা আলোকলতা মণ্ডল বিজেপির ৩১ নম্বর মণ্ডলের সহ-সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘ছেলের মাথায় আঘাত ছিল। কেউ বলছে তাঁকে খুন করা হয়েছে, কেউ বলছে দুর্ঘটনা। সব কথাই জানিয়েছি কমিশনের সদস্যদের।’’ বস্তুত, তুফানগঞ্জে তৃণমূলের উপরে বিজেপির হামলার অভিযোগই বেশি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। বালাভূত গ্রাম পঞ্চায়েতের গোপালের কুঠিতে বিজেপি কর্মী দিলীপ মণ্ডল, পবিত্রকুমার রায়, নির্মল বর্মণের বাড়িতে যান কমিশনের সদস্যরা। নির্মল ভোটের পরে অসমে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন বলে দাবি। তিনি বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে এসে হুমকি দেয় তৃণমূল। ভয়ে আমি অসমে আশ্রয় নিয়েছি।’’

Advertisement

তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘কমিশনের সদস্যরা বিজেপি নেতৃত্বের কথা মেনেই সফর করছেন। তাঁদের কী রিপোর্ট করতে হবে, তা আগাম ঠিক করে নিয়েছেন। সে ভাবেই ঘুরছেন।’’ বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, ‘‘শাসক দলের সন্ত্রাসে আমাদের কর্মীরা ঘরছাড়া। কত জনকে খুন করা হয়েছে, গ্রামে গ্রামে ঘুরলেই তা স্পষ্ট হয়ে যায়। কমিশনের সদস্যরা সব জেনে ফেলছেন দেখে তৃণমূল উদ্বিগ্ন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন