অস্ত্র-আতঙ্ক

ঘোড়ার দাপটে ঘুম ছুটেছে পুলিশের

বুধবার ডাউয়াগুড়িতে দিনের আলোয় বড়জোর মিনিট তিনেকের মধ্যে ১১ রাউন্ড গুলি চালিয়ে এক যুবকের দেহ ‘ঝাঁজরা’ করে দেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সন্দেহ করছে, দু’টি পিস্তল থেকে ওই গুলি চালানো হয়। দু’টি পিস্তলই নাইন এমএম বা অত্যাধুনিক কোনও রিভলবারের। উদ্ধার হওয়া ওই গুলি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠাবে পুলিশ।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০১৭ ০২:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

সময় বড় জোর এক ঘণ্টা। বরাত দিলেই হাতে পৌঁছে যাবে ‘ঘোড়া’। যেমন ‘ঘোড়া’, দরও তেমন। কোচবিহার থেকে ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকায় ‘ঘোড়া’র বরাত অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। হাতে হাতে ঘুরছেও তা। অপরাধজগতে পিস্তলের পরিচিত নাম ‘ঘোড়া’।

Advertisement

বুধবার ডাউয়াগুড়িতে দিনের আলোয় বড়জোর মিনিট তিনেকের মধ্যে ১১ রাউন্ড গুলি চালিয়ে এক যুবকের দেহ ‘ঝাঁজরা’ করে দেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সন্দেহ করছে, দু’টি পিস্তল থেকে ওই গুলি চালানো হয়। দু’টি পিস্তলই নাইন এমএম বা অত্যাধুনিক কোনও রিভলবারের। উদ্ধার হওয়া ওই গুলি ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠাবে পুলিশ।

ডুয়ার্সের বিস্তীর্ণ এলাকায় এখন দেশি পিস্তলের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে অত্যাধুনিক রিভলবার। নাইন এমএম থেকে সেভেন এমএম এখন অপরাধীদের হাতে হাতে ঘুরছে বলে সন্দেহ পুলিশের। সেই তুলনায় কদর অনেকটাই কম দেশি পিস্তল পাইপগান (যা এলাকায় ওয়ান সটার নামে পরিচিত) ও সিক্স রাউন্ডের। তাতেই ভাঁজ পড়েছে পুলিশ কর্তাদের কপালে। অল্প সময়ে বড় ধরণের দুষ্কর্ম করতে অত্যাধুনিক পিস্তলের জুড়ি মেলা ভার। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। জলপাইগুড়ি রেঞ্জের ডিআইজি রাজেশ যাদব বলেন, “বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারে সব সময়ই বিশেষ অভিযান চালানো হয়। মাঝে মধ্যেই সাফল্যও মিলছে।”কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “মাঝে মধ্যে অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে। দিন কয়েক আগেও মাথাভাঙা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র মেলে।”

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, অস্ত্র ব্যবসার মূল কারিগররা হয় অসমের না হলে বিহারের। এক সময় বিহারের মুঙ্গের থেকে আসা দেশি ও অত্যাধুনিক দুই ধরণের অস্ত্রই ব্যবহার করত দুষ্কৃতীরা। বর্তমানে দেশি পিস্তল তৈরির রসায়ন জেনে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার এমনকি জলপাইগুড়ির নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় ঘরে বসেই অপরাধীরা তৈরি করছে তা। ২-৩ হাজার টাকায় বিকোচ্ছে ওই বন্দুক। অত্যাধুনিক অস্ত্রের অবশ্য এখনও বেশিরভাগটাই আসছে মুঙ্গের থেকে। কাটিহার, কিসানগঞ্জ হয়ে শিলিগুড়ি সংলগ্ন এলাকা দিয়ে চোরাপথে ওই অস্ত্র পৌঁছে যাচ্ছে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে।

অত্যাধুনিক ‘ঘোড়া’ একটি ১৫-২০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। গুলির দাম শুরু হয় পাঁচশ টাকা থেকে। মায়ানমার থেকে অরুণাচল প্রদেশ অসম হয়েও অস্ত্র ঢুকছে এই বিস্তীর্ণ এলাকায়। তবে ওই পথে অস্ত্র আমদানি অনেকটাই কমেছে বলে গোয়েন্দা সূত্রের দাবি। (শেষ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement