শুধু শহর নয়, ভুয়ো ডাক্তারের জাল ছড়িয়ে রয়েছে মালদহ জেলা জুড়েই। ইংরেজবাজার শহরের ৩ নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনি থেকে গ্রেফতার হওয়া দুই ভুয়ো ডাক্তারদের জেরা করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
পুলিশের অনুমান ধৃত সিদ্ধার্থ কর্মকার ও আইনুল হককে জেরা করে ভুয়ো ডাক্তার সম্পর্কিত আরও অনেক তথ্য মিলবে। তাই শুক্রবার ধৃতদের সাত দিনের হেফাজতে চেয়ে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করেছে পুলিশ। আর জেলাতে ভুয়ো ডাক্তারের হদিশ মেলায় উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষও।
তাঁদের বক্তব্য, শহরের অলিগলিতে চেম্বার রয়েছে ডাক্তারদের। প্রত্যেকেই নিজস্ব ডিগ্রির উল্লেখ করে সাইনবোর্ডও ঝুলিয়ে রাখেন। তাই রোগী দেখার ক্ষেত্রে কী ভাবে বাছাই করবেন ভুয়ো ডাক্তারদের, তা নিয়েই ধোঁয়াশায় রয়েছেন সাধারণ মানুষ। যদিও উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের।
পুলিশ জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ইংরেজবাজার শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনি এলাকা থেকে আটক করা হয়েছিল মানিকচকের মথুরাপুরের বাসিন্দা সিদ্ধার্থ কর্মকার ও কালিয়াচকের মোথাবাড়ির বাসিন্দা আইনুল হককে। তাঁরা দু’জনই নিজেদের ডাক্তার পরিচয় দিয়ে বৈধ নথি রয়েছে বলে প্রথমে পুলিশের কাছে দাবি করেন। পুলিশ তদন্তে নেমে দেখেন সিদ্ধার্থ শহরের এক বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান থেকে ল্যাবের কোর্স করেছেন। সেই কোর্সের সার্টিফিকেট ছাড়া আর কিছুই নেই।
রোগী টানতে শহরের বেশ কিছু নার্সিংহোমের সামনে টাকার বিনিময়ে কিছু রিকশা চালকদের ছেড়ে রেখেছিলেন। ইংরেজবাজার থানার পুলিশের এক কর্তা বলেন, ধৃতদের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের জেরা করে ভুয়ো ডাক্তারদের নামের তালিকা তৈরি করা হবে। তারপরে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে সেই চেম্বার গুলিতে অভিযান চালানো হবে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার ১৫টি ব্লকে হাজার খানেক ইনফরমার হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার রয়েছে। তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানো হয়েছে। তারপরই তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য। তবে তাঁরা কখনও নিজেদের চিকিৎসক বলে দাবি করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দিলীপ কুমার মন্ডল। তিনি বলেন, কেউ যদি এমনটি করেন তা আইন বিরোধী।