drone

ড্রোনের নজর সত্ত্বেও মৃত আরও ২ গন্ডার

বেলগাছিয়া বা বরেলি থেকে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে পরপর গন্ডার মৃত্যুর কারণ নিয়ে রিপোর্ট এখনও আসেনি। বনকর্তাদের ধারণা, সেই রিপোর্ট পৌঁছতে অন্তত সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। কিন্তু সেই সময় পর্যন্ত আর অপেক্ষা করতে নারাজ বনকর্তারা। 

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৮:৪২
Share:

পদক্ষেপ: হাতির পাহারা। নিজস্ব চিত্র।

একের পর এক গন্ডারের মৃত্যু হচ্ছে। মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তার পরেও হাল ছাড়তে রাজি নন জলদাপাড়ার বন দফতরের কর্তারা। তাই, কবে রিপোর্ট আসবে সেই অপেক্ষায় না থেকে শুক্রবার থেকে সেই চেষ্টাই শুরু হল বন দফতরের অন্দরে। তার মাঝে অবশ্য এ দিনও সেই শিসামারাতেই আরও দু’টি গন্ডারের মৃত্যু হয়েছে।

Advertisement

বেলগাছিয়া বা বরেলি থেকে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানে পরপর গন্ডার মৃত্যুর কারণ নিয়ে রিপোর্ট এখনও আসেনি। বনকর্তাদের ধারণা, সেই রিপোর্ট পৌঁছতে অন্তত সোমবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। কিন্তু সেই সময় পর্যন্ত আর অপেক্ষা করতে নারাজ বনকর্তারা।

এ বার জলদাপাড়ায় থাকা গন্ডারদের অ্যানথ্রাক্স হতে পারে ধরে নিয়ে প্রতিষেধক দেওয়াও শুরু হল। এ দিন চারটি গন্ডারকে এই প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বন দফতরের কর্তারা। সেই সঙ্গে অজানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনার ক্ষেত্রে যে প্রতিষেধক থাকে, এ দিন থেকেই তা দেওয়া শুরু হয়েছে জলদাপাড়ার কুনকি হাতিদের, বিশেষ করে যে কুনকি হাতিগুলি বনকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে শিসামারা ও মালোঙ্গি বিট ঘিরে রেখেছে।

Advertisement

এই দুই বিটের মধ্যে শিসামারা থেকেই গন্ডারের মৃত্যু মিছিলের শুরুটা হয়েছিল। শুক্রবারের ঘটনাকে ঘিরে গত চার দিনে সেখানে গন্ডারের মৃত্যু সংখ্যা বেড়ে হল পাঁচ। বন দফতর সূত্রের খবর, এই ঘটনাগুলির জেরে বৃহস্পতিবারেই উত্তরবঙ্গের সব জঙ্গলে সতর্কতা জারির পাশাপাশি জলদাপাড়াতে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। যার জেরে জলদাপাড়ার শিসামারা ও মালঙ্গি বিটকে জঙ্গলের বাকি অংশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়।

তার পরেও শুক্রবার আরও দু’টি গন্ডারের মৃত্যুর পরে বনকর্তাদের তৎপরতা আরও বেড়ে যায়। শিসামারা ও মালঙ্গি বিটকে কুনকি হাতি দিয়ে ঘিরে রাখার পাশাপাশি ড্রোনের সাহায্যে বন্যপ্রাণীদের উপর নজরদারি রাখাও শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে গন্ডারদের প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ। জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় গবাদি পশুর উপরেও নজর রাখা হচ্ছে বলেও জানা গিয়েছে।
জলদাপাড়ার ডিএফও কুমার বিমল বলেন, ‘‘পর পর গন্ডারগুলির মৃত্যু নিয়ে এখনও কোনও রিপোর্ট আসেনি। তবে আমাদের আর অপেক্ষা করারও উপায় নেই। সে জন্যই পশু চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী এ দিন থেকে গন্ডারদের অ্যানথ্রাক্সের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়েছে। এ দিন চারটি গন্ডারকে এই প্রতিষেধক দেওয়া হয়।’’

তবে বনকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এই দুই বিটকে পাহারা দেওয়া কুনকি হাতিদেরও যাতে কিছু না সে দিকেও নজর রেখেছেন বনকর্তারা। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ বলেন, ‘‘সেই জন্যই অজানা ব্যাক্টেরিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে যে প্রতিষেধক থাকে তা ওই কুনকি হাতিদের দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’

রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা গন্ডার-সহ জলদাপাড়ার বন্যপ্রাণীদের উপর নজর রেখেছি। সোমবারের মধ্যেই গন্ডারগুলির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে রিপোর্ট চলে আসবে বলে আমরা আশা করছি। তার পরে সেই অনুযায়ী যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন