গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই কাড়ল প্রাণ

পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে ঘিরে ইসলামপুরের পণ্ডিতপোতায় শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, বোমাবাজির ঘটনায় উত্তপ্ত এলাকা। শনিবার সে ভাবে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে তাতে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৮ ০৩:১২
Share:

নজরদার: বোমাবাজির পর থমথমে এলাকা। ইসলামপুরের পণ্ডিতপোতায়। নিজস্ব চিত্র

পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনকে ঘিরে ইসলামপুরের পণ্ডিতপোতায় শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ, বোমাবাজির ঘটনায় উত্তপ্ত এলাকা। শনিবার সে ভাবে গোটা এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছে তাতে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। অভিযোগ, বোমার আঘাতে একজনের মৃত্যুও হয়েছে পুলিশের সামনেই। কর্তব্যরত কয়েক জন পুলিশও তাঁরাও আক্রান্ত হন। সংঘর্ষের সময় বেগতিক পরিস্থিতি দেখে তাঁদের পালাতে হয়েছে। পরে বিশাল পুলিশবাহিনী যায়।

Advertisement

সম্প্রতি খেলা করতে গিয়ে পণ্ডিতপোতার খবরগাঁও মাদ্রাসা সংলগ্ন এলাকায় বোমা ফেটে জখম হয়েছিল দুই শিশু। এক জনের হাত বোমার আঘাতে নষ্ট হয়ে যায়। সে সময় তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছিল। বোমা বাঁধার কাজ সেখানে হত বলে অভিযোগ ওঠে। পঞ্চায়েত ভোটে বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে ফের এলাকা উত্তপ্ত হতে পারে বলে অনেকেই আঁচ করেছিলেন। সেই আশঙ্কাই সত্য হল। এ দিন রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিম পণ্ডিতপোতার ঘটনা নিয়ে ট্যুইট করে বলেছে, ‘‘পঞ্চায়েত দখল করতে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় পুলিশে সামনে তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা দলেরই এক জনকে খুন করলেন।’’ তাঁর দাবি, বোমা-গুলি উদ্ধারে পুলিশ আগে তৎপর হলে এটা হত না।

তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, ‘‘নির্দল থেকে যারা তৃণমূলে আশ্রয় নিয়েছিল তারাই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। এ দিন প্রশাসনিক কারণে বোর্ড গঠন স্থগিত ছিল। তার পরেও ওই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক। নির্দল থেকে তৃণমূলে এসেছে যারা তাদের বিরুদ্ধে শীর্ষ নেতৃত্বকে ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।’’

Advertisement

বিরোধীদের দাবি, অমলবাবুর বক্তব্যেই স্পষ্ট তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলেই এই ঘটনা। চাকুলিয়ার বিধায়ক তথা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা আলি ইমরান রামজ খবর পেয়ে হাসপাতালে যান। বোমার আঘাতে মৃত লালা মহম্মদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বলেন, ‘‘গোলমালের আশঙ্কা ছিলই। প্রাক্তন প্রধান সাবির আলম সে কারণে প্রশাসনকে জানিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছিলেন। প্রশাসনের তরফে মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছি। পুলিশের গাফিলতিতেই এটা ঘটল।’’

ইসলামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক কানাইয়ালাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘দলে গোষ্ঠীকোন্দল নেই। এলাকায় গন্ডগোল হয়েছে। তাতে এক জন মারা গিয়েছেন। এটা দুঃখজনক। প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’’

জেলা বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ সেনের দাবি, কী ঘটেছে সকলেই দেখলেন। বোর্ড গঠন এবং তার পর সরকারি খাতের টাকা ভাগ-বাঁটোয়ারার পরিকল্পনা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলে এটা ঘটল। শাসক দলই এলাকায় সন্ত্রাস করছে সেটা স্পষ্ট। এ জন্যই মানুষ বিজেপিকে চাইছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন