জেলার বেশ কিছু পার্শ্বশিক্ষকের বেতন আটকে দিল সমগ্র শিক্ষা মিশন। ডুয়ার্স, ময়নাগুড়ি এবং জলপাইগুড়ির পার্শ্বশিক্ষকদের কয়েকজনের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি যথাযথ না থাকায় বেতন আটকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে মিশন সূত্রের খবর। যদিও এ প্রসঙ্গে মিশন অথবা জেলা প্রশাসনের থেকে সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। সাম্প্রতিক সময়ে যত নিয়োগ এবং বদলির নির্দেশ জারি হয়েছে তার ফাইল ফের খতিয়ে দেখা হতে পারে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি। যে শিক্ষকদের বেতন বন্ধ হয়েছে তাঁদের ডাকা হয়েছে।’’
সম্প্রতি সমগ্র শিক্ষা মিশন থেকে পার্শ্বশিক্ষকদের বদলির নির্দেশ জারি হয় বলে দফতর সূত্রে খবর। শিক্ষার স্বার্থে পার্শ্বশিক্ষকদের বদলির মতো ‘ব্যতিক্রমী’ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই বদলির নির্দেশ নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
বেশ কিছু স্কুল যেখানে শিক্ষকের প্রয়োজন সেখানে পার্শ্বশিক্ষকদের পাঠানো হলেও, তার মধ্যে এমন কিছু ফাইলও রয়েছে যেখানে কাউকে কাউকে বাড়ির কাছে পাঠানো হয়েছে। যে স্কুলে প্রয়োজন নেই সেখানেও শিক্ষকদের বদলির নির্দেশ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাছাড়া কীসের ভিত্তিতে এই বদলিগুলি হয়েছে তার যথাযথ ব্যাখ্যাও সরকারি নোটশিটে নেই বলেও অভিযোগ উঠেছে।
যে পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন বন্ধ করা হয়েছে, তাঁরা সকলেই প্রাথমিক স্কুলের। মিশন সূত্রের খবর, তাঁদের নিয়োগের যে নথি রয়েছে তার সঙ্গে সরকারি নিয়মের সামঞ্জস্য নেই। প্রাথমিক ভাবে অসঙ্গতি পেয়ে বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের থেকে নথিও চাওয়া হয়েছে। তবে বদলির নির্দেশ প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক দুই স্কুলের ক্ষেত্রেই মিশনের তরফে দেওয়া হয়েছিল। বেশ কিছু ক্ষেত্রে পার্শ্বশিক্ষককে অন্যত্র পাঠানোয় স্কুলে শিক্ষকের ঘাটতিও হয়েছে বলে অভিযোগ।
যাঁর সময়ে এই অভিযোগ উঠেছে, সমগ্র শিক্ষা মিশনের সেই প্রকল্প আধিকারিক সুকদেব নন্দী গত মাসে অবসর নিয়েছেন। তাঁকে একাধিকবার ফোন করা হলেও ধরেননি, মেসেজ পাঠানো হলেও উত্তর দেননি। বর্তমানে প্রকল্প আধিকারিকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক মৃণ্ময় ঘোষকে। তিনিও এ নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তাঁর অফিস থেকে জানানো হয়, জেলাশাসকের দফতরে তিনি বৈঠকে ব্যস্ত রয়েছেন।
তবে বিরোধী শিক্ষক সংগঠনের নেতারা মুখ খুলেছেন। বামপন্থী শিক্ষক সংগঠন এবিপিটিএ-র জেলা সম্পাদক বিপ্লব ঝা বলেন, “মাইনে বন্ধ হওয়ার খবর শুনেছি। অনেক অনিয়ম হয়েছে বলে বারবার অভিযোগ করা হয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে ভাল।” তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি নির্মল সরকার বলেন, ‘‘প্রশাসনিক বিষয়। আমাদের কিছু বলার নেই।’’