আলাদা ওয়ার্ড থেকে জিতলেও একই একই ওয়ার্ডের বাসিন্দা দুজনকে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান করা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরের ক্ষোভ প্রকাশ্যে দেখা গেল মাথাভাঙায়।
বৃহস্পতিবার মাথাভাঙা পুরসভার বোর্ড গঠন হয়। পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও বাসিন্দা লক্ষপতি প্রামাণিককে চেয়ারম্যান করা হয়। ওই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চন্দন দাসকে ভাইস চেয়ারম্যান করা হয়। চন্দনবাবু কোচবিহার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কল্যাণী পোদ্দারের স্বামী।
দুজনের নাম ঘোষণার পরে তৃণমূল কাউন্সিলরদের কয়েকজন বাইরে বেরিয়ে এসে দলের ওই নির্বাচনের প্রতিবাদ করেন। প্রকাশ্যে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। তুফানগঞ্জের পরে মাথাভাঙা পুরবোর্ড গঠন নিয়ে কাউন্সিলরদের মধ্যে বিরোধ প্রকাশ্যে চলে আশায় বিব্রত জেলা তৃণমূল নেতার।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশ মেনেই ওই দুজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কার কোথায় বাড়ি সেটা বড় কথা নয়। সব ওয়ার্ডে সমান উন্নয়ন হবে।”
জেলা নেতৃত্বের কথা অবশ্য মানতে নারাজ দলের বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর। এদের মধ্যে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর মুকুল সাহা এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিনতি বিশ্বাস দলের ওই সিদ্ধান্তের সরাসরি বিরোধিতা করেছেন। মুকুলবাবুর অভিযোগ, জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এবং প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কল্যাণী পোদ্দার যৌথভাবে কলকাঠি নেড়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিনতি বিশ্বাস বলেন, “আমি তিন বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর। দল আমার কথা ভাবতেই পারত। তা না ভেবে একই ওয়ার্ডের দুজনকে দায়িত্ব দিল যা মেনে নেওয়া যায় না।”
মাথাভাঙা পুরসভা গঠন হওয়ার পর থেকে বামেদের দখলেই ছিল। গত পুরবোর্ডে বাম ও তৃণমূল ৬ টি করে আসন পায়। টসে চেয়ারম্যানের পদ দখল করে বামেরা। এবারেই প্রথম একক ভাবে ১২ টির মধ্যে ৯ টি আসন পেয়ে তৃণমূল বোর্ড দখল করে। বাকি ৩ টি আসনের মধ্যে ২ টি পায় সিপিএম এবং ১ টি পায় বিজেপি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর থেকেই চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হয়। চার জন কাউন্সিলরের নাম ওই পদগুলিতে উঠে আসে। তুফানগঞ্জে চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ে কাউন্সিলরদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়েছিল। রাজ্য নেতৃত্বের ঠিক করে দেওয়া নাম অমান্য করে অনন্ত বর্মাকে চেয়ারম্যান করা হয়। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে জন্য কাউন্সিলরদের দলীয় হুইপ জারি করা হয়।
দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু, বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন এবং আব্দুল জলিল আহমেদ কাউন্সিলরদের নিয়ে শপথগ্রহণ মঞ্চ নজরুল সদনে পৌঁছন। দলীয় কাউন্সিলরদের ক্ষোভ নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তাঁরা বলেন, “দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে সব হয়েছে।’’