হাসি: পাহাড়ে ফিরেছে খুশি। এখন চাহিদা শিল্পের। নিজস্ব চিত্র
দু’দিনের ‘হিল বিজনেস সামিট’-এর সমাপ্তির দিনে দার্জিলিঙে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব মিলেছে। বুধবার দার্জিলিঙের ম্যাল চৌরাস্তার মঞ্চ থেকে এ কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পর্যটন, তথ্য প্রযুক্তি, ফুল ফল অর্কিড, চা পর্যটন, কৃষিভিত্তিক ক্ষেত্রে ওই বিনিয়োগ হবে। সব মিলিয়ে ১৮টি স্পষ্ট প্রস্তাব দিয়েছেন শিল্পোদ্যোগী ও ব্যবসায়ীরা। প্রস্তাবে বিলাসবহুল রিসর্ট থেকে বড় এলাচ প্রক্রিয়াকরণ শিল্প সবই রয়েছে।
কলকাতার মতো মিরিকে ভাসমান বিপণন কেন্দ্র, কার্শিয়াঙে রাজ্যের প্রথম ‘এডুকেশন হাব’ তৈরির ঘোষণাও হয়েছে দার্জিলিঙের মঞ্চ থেকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আরও বিনিয়োগ আসবে। এটা শুরু হল মাত্র। শান্তি থাকলে পুরো দার্জিলিঙের চেহারাটাই বদলে যাবে।’’
দার্জিলিঙে শিল্প সম্মেলনে বিনিয়োগ টানতে সলতে পাকানো শুরু হয়েছিল বেশ কিছু দিন আগে থেকে। রাজ্যের আমলারা হিসেব কষে দেখেছিলেন, প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার মতো বিনিয়োগের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। গত দু’দিন ধরে আলোচনার পরে সেই অঙ্ক ছাপিয়ে গিয়েছে। এমনটাই দাবি রাজ্যের। কোন ক্ষেত্রে কত বিনিয়োগ হবে, তার খুঁটিনাটি হিসেবও প্রকাশ করবে শিল্প দফতর। তার আগে এ দিন যতটুকু জানা গিয়েছে, তাতে কালিম্পঙে ঝাড়ু তৈরির ইউনিট করবে বিপণিতে একটি নামী ব্র্যান্ডের স্বত্বাধিকারী সংস্থা। ২০০০ পরিবারকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ওই ইউনিটের আওতায় আনা হবে। ওই গোষ্ঠীই তেঁতুল প্রক্রিয়াকরণ শাখা গড়বে সেখানে। বড় এলাচ ভিত্তিক প্রক্রিয়াকরণ হবে গরুবাথান তোদে, তাংতায়। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের বেশ কয়েকটি ইউনিট হবে দার্জিলিং শহর লাগোয়া গ্রামে। তাতে বিনিয়োগ করার কথা একটি বহুজাতিক সংস্থার। তার প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন সম্মেলনে। মিরিকে ভাসমান বিপণন কেন্দ্র গড়বে পুরসভা। সেই উদ্যোগে চা এবং পর্যটন বিষয়ক দফতরকে সামিল করে বেসরকারি বিনিয়োগের পথ প্রশস্ত করা হয়েছে। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও চা পর্যটনে জোর দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চা বাগানে ৫০ শতাংশ পর্যটনের জন্য ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’’ চা বাগানে পর্যটন গড়তে একটি সংস্থা এ দিন প্রায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকার প্রস্তাব দিয়েছে। দীর্ঘ বন্ধের পরে পাহাড়ে রাজ্যের ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোগীদের সম্মেলন থেকে কী ঘোষণা হয়, তা নিয়ে স্থানীয়দের অনেকেরই কৌতুহল, প্রত্যাশা ছিল। তাই ১৮ টি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ঘোষণার পরে কিছুটা স্বস্তির ছাপ জিটিএ-র কেয়ারটেকার চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গের মুখেও। তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ের মানুষের প্রত্যাশা আকাশছোঁয়া। তাই দ্রুত বিনিয়োগ চাই। না হলেই ক্ষোভ দানা বাঁধাতে চেষ্টা জোরদার হবে।’’