ফেরা: ভোট শেষ। ব্যালট বক্স গোছানোর তোড়জোড় চলছে। ময়নাগুড়িতে। শনিবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
তাঁর টিকিট নিয়ে দলে দ্বন্দ্ব ছিল। ওই আসনে অন্য শিবির থেকে নামও চূড়ান্ত করা হয়েছিল। জানতে পেয়ে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব থেকে জেলাকে জানানো হয়, যে নেতাই যাঁর নাম সুপারিশ করুন না কেন রাজগঞ্জ থেকে জেলা পরিষদে ঘাসফুল চিহ্নে উত্তরা বর্মনই প্রার্থী হবেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তেনটাই চাইছে বলে জানানো হয়। এর পর জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদে রাজগঞ্জের ওই জেলা পরিষদ আসন নিয়ে আর বির্তক হয়নি। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ তৃণমূল দখল করায় জেলা নেতৃত্ব মনে করছেন, সভাধিপতির দৌড়ে অনেকটা এগিয়ে আছেন উত্তরা বর্মনই।
বাম আমলে শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন উত্তরা। সে সুবাদে দলের রাজ্য নেতারা অনেকেই তাঁকে চেনেন। তৃণমূলের অন্দরের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নামে চেনেন উত্তরা বর্মনকে। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ তৃণমূল দখল করতে পারেনি। সে বারও তৃণমূলের হয়ে জেলা পরিষদ আসনে উত্তরাদেবী জয়ী হোন। বাম দখলে থাকা জেলা পরিষদে তিনিই ছিলেন বিরোধী নেত্রী। দল বদলের জেরে জেলা পরিষদ তৃণমূল দখল করে। সভাধিপতি অবশ্য একই থাকেন। এ বারে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি আসনটি তফসিলি মহিলার জন্য সংরক্ষিত। সে দিক থেকেও উত্তরা বর্মনের ভাগ্যেই শিকে ছেঁড়ার সম্ভাবনা বেশি বলে দাবি দলের অনেকের। এক জেলা নেতার কথায়, “প্রাক্তন প্রধান, প্রাক্তন বিরোধী দলনেত্রী ছিলেন। তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতার কথা দল জানে। তার সঙ্গে রাজ্য নেতৃত্বও ওঁকে ভালই চেনে। জেলায় দলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীও তাঁকে চাইছে। এত আর্দশ পরিস্থিতি অন্য কারও নেই।”
নতুন মুখ কাউকে জেলা পরিষদের সভাধিপতি করা হতে পারে তেমন জল্পনাও রয়েছে। আলোচনা শুরু হয়েছে গীতা দাস রাজবংশীর নাম নিয়ে। জলপাইগুড়ি সদর আসন থেকে তিনি বিজয়ী হয়েছেন। দীর্ঘদিন থেকে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি হয়ে আসছেন সদরের বাইরের এলাকা থেকে। তা নিয়ে সদরের রাজনৈতিক মহলে ক্ষোভও রয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদ এ বারে বিরোধীশূন্য হয়েছে। জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর ঘনিষ্ঠ এক নেতার সুপারিশে গীতা দাস রাজবংশী প্রার্থী হয়। তাই তিনিও সভাপতির দৌড়ে রয়েছেন।
দলের টিকিট বিলি নিয়ে মূল সংগঠনের সঙ্গে যুব সংগঠনের বিবাদ তুঙ্গে উঠেছিল। রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে কিছু সংখ্যক আসন যুবকে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। যুব সংগঠনের দাবি সভাধিপতির আসনটি তাদের চাই। সেই দাবিতে নাম উঠে এসেছে ক্রান্তি এলাকা থেকে নির্বাচিত কৃষ্ণা রায় বা ময়নাগুড়ির উর্মিলা রায়ের নামও। যাঁদের নাম নিয়ে চর্চা চলছে তাঁরা অবশ্য কেউই মুখ খুলতে চাননি। জেলা তৃণমূল সভাপতিও সম্ভাব্য সভাধিপতির নাম নিয়ে সংবাদমাধ্যমে মন্তব্য করতে রাজি নন। রাজ্য নেতৃত্বই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন বলে সৌরভবাবুর দাবি।