প্রতীকী চিত্র।
একঝলক দেখলে মনে হবে যুদ্ধে বা আপৎকালীন পরিস্থিতি জন্য তৈরি পোশাক। অনেকটাই যেন, সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের কর্মীদের মত। মুখ ঢাকা মুখোশ, হাঁটুর নীচ অবধি লম্বা জুতো। আবার দুই হাত ও গলা ঢাকা লম্বা জ্যাকেট। অ্যালমুনিয়ামের প্রলেপ দেওয়া জ্যাকেটটি আবার নাকি নেপালের রাজবংশের। পোশাকগুলো অগ্নিনির্বাপক বলেও দাবি করা হয়। এসব বলেই ভুয়ো পোশাক বিক্রির অভিযোগ উঠল শিলিগুড়িতে। গ্রেফতারও করা হল একজনকে।
ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন এহেন পোশাক কিনলে দাম পড়বে প্রায় ২২ লক্ষ টাকা। নেপালের কাঠমান্ডু থেকে দমক, ঝাপার একাধিক বাসিন্দার কাছে এমনই গল্প ফেঁদে একটি জালিয়াতি চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছিল শিলিগুড়ি মহকুমার নকশালবাড়িতে। পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি কাঁকরভিটায় ‘রাজ আমালের পোশাকে’র ছবি দেখিয়ে লক্ষাধিক টাকা আদায়ের ছকও কষা হয়। কিন্তু পুলিশ খবর পেয়ে হানা দিতেই নকশালবাড়ির কদমামোড় থেকে উদ্ধার হয় পোশাক। কিন্তু মূল অভিযুক্তরা পলাতক। বর্তমানে দার্জিলিং জেলা পুলিশ একটি বিশেষ অপারেশন গ্রুপ অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। পুরনো এবং ঐতিহাসিক জিনিস কেনার লোভ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের কাছে নানা এজেন্ট মারফৎ খবর পাঠিয়ে ওই ভুয়ো রাজার পোশাক বিক্রির ছক করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, জালিয়াতি চক্রের মূল পান্ডা নকশালবাড়ি বেলগাছি চা বাগানের একজন শ্রমিক। বর্তমানে সে সঙ্গীদের নিয়ে নেপালে লুকিয়ে রয়েছে বলে খবর মিলেছে। কয়েক বছর আগে মালদহের একটি মূর্তি পাচারের মামলায় ওই অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছিল। গাড়িটি যে এলাকা থেকে উদ্ধার হয়েছে সেটি দার্জিলিং জেলা পুলিশের মিরিক থানার অধীনে রয়েছে। মিরিকে’র এসডিপিও অনুপম সিংহ বলেন, ‘‘এদের সঙ্গে পুরাতত্ত্ব সামগ্রী পাচার চক্রের কোনও যোগাযোগ রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে।’’
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, ওই জ্যাকেট, জুতো, মাক্সের সব মিলিয়ে মেরেকেটে ১০ হাজার টাকা মত দাম হবে। প্রত্যেকটিতে অ্যালমুনিয়াম ফয়েল জাতীয় বস্তু সেলাই করে উপরের অংশে জোড়া হয়েছিল। চকচকে রঙের পোশাকগুলি দেখাই একঝলকে তা অন্যরকম মনে হবে। পোশাকগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠান হবে। নেপালের পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবার গভীর রাতে পানিঘাটা ওসি তপন কুমার দাসের কাছে রাজার পোশাক বলে তা নেপালে বিক্রির চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে খবর আসে। রাতে কদমামোড় থেকে অর্জুন বরাইক নামের এক
চা শ্রমিককে একটি গাড়ি সমেত ধরা হয়। ওই চা শ্রমিকের বাড়ি থেকে লক্ষাধিক টাকার দু’টি গাড়ি, বাইক, ইলেকট্রনিক সরঞ্জাম উদ্ধার
করে পুলিশ।