মামলা উঠল না গুরুং, গিরিরও

বিচারপতি অনুরোধ করেছিলেন কর্মবিরতি না করে অন্য কোনও প্রতিবাদের পন্থা খুঁজে বের করতে। যদিও শেষমেশ জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের আইনজীবীরা কর্মবিরতিতেই অনড় রইলেন

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৫৮
Share:

শুনশান: আইনজীবীদের কর্মবিরতির দিন হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ চত্বর। একই ছবি ছিল জেলা আদালতেও।

বিচারপতি অনুরোধ করেছিলেন কর্মবিরতি না করে অন্য কোনও প্রতিবাদের পন্থা খুঁজে বের করতে। যদিও শেষমেশ জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের আইনজীবীরা কর্মবিরতিতেই অনড় রইলেন। তার জেরে এ দিন সার্কিট বেঞ্চের সব শুনানি মুলতুবি হয়ে যায়। এ দিন বিমল গুরুংদের আগাম জামিনের শুনানিও হওয়ার কথা ছিল। তা-ও মুলতুবি হয়ে গিয়েছে। আগামী সোমবার পর্যন্ত কর্মবিরতি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আইনজীবীরা। ফলে সেই অবধি কোনও শুনানি হবে না বলেই আশঙ্কা সকলের।
হাইকোর্টের সার্কিটে এ দিন সকালে বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চ বসার পরেই জলপাইগুড়ি হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে জানানো হয়, হাওড়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা কর্মবিরতি করছেন। বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায় বার অ্যাসোসিয়েশনকে কর্মবিরতি না করে অন্য কোনও উপায়ে প্রতিবাদ জানানো যায় কিনা, তা ভেবে দেখতে অনুরোধ করেন। বারের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করবেন বলেও জানান তিনি। বিচারপতির অনুরোধের পরে বার অ্যাসোসিয়েশন বৈঠকে বসলেও তাদের সিদ্ধান্তে বদল হয়নি। আধ ঘণ্টা পরে তাদের তরফে ডিভিশন বেঞ্চকে জানানো হয়, গোটা রাজ্যেই কর্মবিরতি হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্টেও হচ্ছে। তাই জলপাইগুড়িতে অন্যথা হোক, চাইছেন না তাঁরা।
বারের সভাপতি কমলকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিচারপতি অনুরোধ করেছিলেন। তবে সারা রাজ্যে আইনজীবীরা কর্মবিরতি করছেন। সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান দিতেই আমরাও কর্মবিরতি করেছি।”
এ দিন হাইকোর্টে ‘হেভিওয়েট’ মামলা বলতে ছিল বিমল গুরুং ও রোশন গিরির আগাম জামিনের আবেদন। গুরুংদের বিরুদ্ধে যে ৭৬টি মামলা রয়েছে, সেগুলির একযোগে শুনানি শুরু হওয়ার কথা ছিল এ দিন। কিন্তু আইনজীবীদের কর্মবিরতিতে তা পিছিয়ে গেল। শুক্রবার ফের তা আদালতে ওঠার কথা। যদিও সোমবার পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করছেন আইনজীবীরা, তবে শুক্রবার এই মামলার ক্ষেত্রে তাঁরা কী অবস্থান নেবেন, তা তখনই জানা যাবে।
এ দিন ডিভিশন বেঞ্চ ও সিঙ্গল বেঞ্চ নিয়ে মোট ১৬৫টি মামলার শুনানি ছিল। সকালে বিচারপ্রার্থীরা বেঞ্চ চত্বরে এসেছিলেন। মামলা হবে না জেনে তাঁদের ফিরে যেতে হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলা আদালতেও কর্মবিরতির জেরে শুনানি হয়নি। ময়নাগুড়ির ভোটপট্টি থেকে এসেছিলেন মালতী মজুমদার। তিনি বলেন, “দু’বার বাস পাল্টে আসতে হয়েছে। কিন্তু আজ তো মামলাই হল না। কবে আবার তারিখ পড়বে কে জানে!” মঙ্গল দাসী মাতব্বর এসেছিলেন ফৌজদারি মামলার শুনানিতে। তিনি বলেন, “প্রচণ্ড রোদে শরীর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু আজকে না এলে সাক্ষ্য দেওয়া হত না। কষ্ট করে এসে শুনলাম, উকিলবাবু নাকি আজ মামলা লড়বেন না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন