মারধর রুখে পুলিশ ডাকল গ্রামবাসী

ছেলেধরা সন্দেহে মারধর না করে পুলিশকে ডাকার ঘটনাকে সচেতনতা প্রচারের ফল হিসেবেই দেখছে জেলা পুলিশের কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৬:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

গ্রামের রাস্তা দিয়ে ঝোলা কাঁধে হেঁটে যাচ্ছিলেন এক বৃদ্ধা। রাস্তার পাশে শিশুদের দেখে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কথা বলতে বলতে ঝোলা থেকে বিস্কুট বের করে ওই শিশুদের দেন ওই বৃদ্ধা। তা দেখে তাঁর দিকে এগিয়ে আসেন গ্রামেরই কয়েকজন যুবক। বৃদ্ধাকে ঘিরে প্রশ্ন শুরু করেন তাঁরা। গ্রামের শিশুদের অপরিচিত বৃদ্ধা কেন বিস্কুট দিয়েছেন তা জানতে চান কয়েকজন। কথা বলতে বলতেই ছেলেধরা সন্দেহে ওই বৃদ্ধার উপর চড়াও হন কয়েকজন। তা দেখে এ বার এগিয়ে আসেন আরও কিছু বাসিন্দা। ক্ষিপ্ত কয়েকজনকে নিরস্ত করে কোতোয়ালি থানার পুলিশকে খবর দেন তাঁরা। কিছুক্ষণের মধ্যে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে ওই বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাহাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মুন্সিপাড়ার ঘটনা। ছেলেধরা সন্দেহে মারধর না করে পুলিশকে ডাকার ঘটনাকে সচেতনতা প্রচারের ফল হিসেবেই দেখছে জেলা পুলিশের কর্তারা।

এর আগে জলপাইগুড়ি জেলায় ছেলেধরা গুজবে বেশ কয়েকজনকে গণপিটুনি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গণপিটুনির ঘটনায় মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। এরই মধ্যে রাজ্যে গণপিটুনি প্রতিরোধ বিল পাশ হয়েছে। গণপিটুনিতে ঘটনায় যুক্ত থাকলে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপের সংস্থান রয়েছে ওই বিলে। এরপরেই সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে পুলিশ কোমর বেঁধে নামে। এ দিন তারই ফল মিলেছে বলে দাবি জেলার পুলিশকর্তাদের একাংশের।

Advertisement

এ দিন ওই বৃদ্ধাকে মারতে কয়েকজন চড়াও হলে বাকিরা এগিয়ে এসে তাঁদের থামায়। পুলিশ আসার আগে বৃদ্ধাকে একজায়গায় বসিয়ে চা-বিস্কুট খাওয়ানো হয় বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীদের কয়েকজন। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম কল্পনা দাস। অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের মোহিত নগরের বাসিন্দা তিনি। বৃদ্ধার ঝোলা থেকে বিস্কুট ও কিছু কাগজ উদ্ধার হয়েছে। এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধাকে গ্রামে আগে দেখা যায়নি। তাই সন্দেহ হয়। তবে কেউ গায়ে হাত দেয়নি।’’ অরবিন্দ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মহেশ রাউটিয়া বলেন, ‘‘ওই বৃদ্ধার বাড়ি আমাদের এলাকায়। তিনি বয়স্ক, হয়তো ভুল করে বাহাদুর এলাকায় চলে গিয়েছিলেন। সাধারণ মানুষ যে তাঁকে মারধর না করে প্রশাসনের হাতে তুলে দিয়েছে এটা খুব ভাল দিক।’’

কোতোয়ালির আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, ‘‘পুলিশের সচেতনতা প্রচার সাধারণ মানুষ বুঝতে পেরেছেন। গুজবে কান দিয়ে গণপিটুনি মত অপরাধ কেউ যেন না করেন তার প্রচার চলছে।

বৃদ্ধাকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া প্রক্রিয়া চলছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন