মৃত্যু তদন্ত চান কৈলাস, পাল্টা বিরোধীদেরও

শনিবার ভোরে মুর্শিদাবাদে পথ দুর্ঘটনায় অভিজিতের মৃত্যু হয়। পরিবারের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাঁকে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে। এ দিন অভিজিৎবাবুর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে আসেন বিজয়বর্গীয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৩
Share:

শোকস্তব্ধ: অভিজিতের স্ত্রীকে সান্ত্বনা কৈলাসের। নিজস্ব চিত্র

প্রয়াত বিজেপি নেতা অভিজিৎ রায়চৌধুরীর মৃত্যু দুর্ঘটনা নয় বলে প্রথমেই দাবি তোলা হয়েছিল পরিবারের তরফে। সোমবার অভিজিৎবাবুর বাড়িতে এসে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানান, শীঘ্রই অভিযোগ দায়ের করা হবে। অভিজিতের পর জেলার দায়িত্ব কে সামলাবেন, তা নিয়ে দলের ভিতরে মতানৈক্য শুরু হয়েছে। বিজেপি সূত্রে খবর, একটি অংশ চাইছেন, অভিজিতের স্ত্রী পারমিতা সভাপতি হোন। দলের আর একটি অংশ বর্তমান বা প্রাক্তন পদাধিকারীদের মধ্যে কাউকে দায়িত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী। তা নিয়ে রাজ্য স্তরে এ মাসেই বৈঠক হওয়ার কথা। সোমবার কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানান, আপাতত সহ-সভাপতিরাই দল চালাবেন।

Advertisement

শনিবার ভোরে মুর্শিদাবাদে পথ দুর্ঘটনায় অভিজিতের মৃত্যু হয়। পরিবারের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তাঁকে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে। এ দিন অভিজিৎবাবুর পরিবারকে সমবেদনা জানাতে আসেন বিজয়বর্গীয়। তিনি বলেন, ‘‘পরিবারের মতো আমিও সন্দেহ করছি, এটা সাধারণ একটা দুর্ঘটনা নয়। অভিজিৎ বিপক্ষ দলের লক্ষ্য ছিল। পরিবার শীঘ্রই অভিযোগ দায়ের করবে।’’

কৈলাসের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘বিজয়বর্গীয় এ শহর বা এ রাজ্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতি জানেন না বলে এমন বলছেন। এ সব উত্তরপ্রদেশে হয়। আমাদের এখানে নয়।’’ দার্জিলিং জেলা সিপিএম সম্পাদক জীবেশ সরকারের কথায়, ‘‘আমরা অভিজিতের মৃত্যুতে খুবই শোকাহত। পরিবারের যদি কোনও অভিযোগ থাকে, তা তাঁরা পুলিশকে বলতেই পারেন। তার বাইরে কিছু বলতে চাই না।’’ দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকার পাল্টা অভিযোগ করেছেন, ‘‘আমার সঙ্গে অভিজিতের পরিবারের সম্পর্ক ভাল। বিরোধীদের কথা বলতে পারব না। তবে ও যে দলের ভেতরেই বিরোধিতার শিকার হচ্ছিল, তা আমাকে বলেছিল। তাই আমিও ওর পরিবারের মতো উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত চাই। ওর দলের কেউ যে এতে জড়িত নেই, তা কে হলফ করে বলতে পারে!’’

Advertisement

অভিজিৎবাবুর উত্তরাধিকার নিয়ে দলে শুরু হয়েছে মতানৈক্য। দলের একটি অংশ চাইছে, অভিজিতের স্ত্রী পারমিতাকে দায়িত্ব দেওয়া হোক। যদিও দলের অন্য অংশের দাবি, পারমিতা দলের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন না। অভিজিৎবাবুর সদ্য প্রয়াণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্তও। তাঁকে পরবর্তী পুরভোটে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দলীয় প্রার্থী করার পক্ষে মত দিয়েছে দলের একাংশ। সূত্রের দাবি, বর্তমান এবং প্রাক্তন পদাধিকারীদের মধ্যে থেকেই কারও নাম বাছার দাবি উঠেছে। সভাপতি পদে জেলার প্রাক্তন সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল এবং সাধারণ সম্পাদক আনন্দময় বর্মণকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন নেতারা। দু’জনেই সঙ্ঘ পরিবার থেকে উঠে আসা কর্মী। প্রবীণের ভোটে লড়ার অভিজ্ঞতা নেই। তবে আগে একই দায়িত্ব সামলেছেন। আনন্দ ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে মাটিগাড়া-নকশালবাড়ি কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হয়েছিলেন। তাই ভোট রাজনীতির অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন