নির্যাতিতাদের কেন ক্ষতিপূরণ নয়, সরব কান্তি

রাজ্যের ধর্ষিতা প্রতিবন্ধীদের ন্যূনতম ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের দাবি তুললেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার বিকেলে রাজগঞ্জ ব্লকের পানিকৌড়ি গ্রামে নিগৃহীতা এক মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন কান্তিবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রাজগঞ্জ (জলপাইগুড়ি) শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০২:৪৯
Share:

ধর্ষিতা প্রতিবন্ধীদের ন্যূনতম ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের দাবি তুললেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। ছবি: সন্দীপ পাল।

রাজ্যের ধর্ষিতা প্রতিবন্ধীদের ন্যূনতম ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্যের দাবি তুললেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। শুক্রবার বিকেলে রাজগঞ্জ ব্লকের পানিকৌড়ি গ্রামে নিগৃহীতা এক মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে দেখা করেন কান্তিবাবু। তাঁদের হাতে সংস্থার তরফে দশ হাজার টাকা তুলে দেন তিনি। এখানেই কান্তিবাবু প্রশ্ন তোলেন, বিষ মদ কাণ্ডে মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হলে, কেন রাজ্যের ধর্ষিতা প্রতিবন্ধীদের আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতে ন্যূনতম ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে না?

Advertisement

গত ১৩ মার্চ রাতে ঘরে একা পেয়ে পানিকৌড়ির মানসিক ভারসাম্যহীন ওই তরুণীকে এক হোমগার্ড মত্ত অবস্থায় ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ। পরদিন পুলিশ অভিযুক্ত হোমগার্ডকে গ্রেফতার করে। স্থানীয় সিপিএম পঞ্চায়েত প্রধান সালিশির মাধ্যমে ঘটনাটি মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সদস্যদের সঙ্গে এদিন নির্যাতিতার বাড়িতে যান পানিকৌড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জিত রায়। তিনি পরিবারের সদস্যদের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, “সালিশি সভার কথা ভিত্তিহীন।” অভিযোগ প্রসঙ্গে কান্তিবাবু বলেন, “সালিশির মধ্যে কোনও ব্যক্তির যাওয়া উচিত নয়। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে। দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, এটাই বড় কথা।”

প্রাক্তন মন্ত্রীর অভিযোগ, গত চার বছরে রাজ্যে ৯১ জন প্রতিবন্ধী ধর্ষিতা হয়েছে। রাজ্য সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। রাজ্য সরকার থেকে ধর্ষিতার পরিবার পিছু ২০ হাজার এবং ৩০ হাজার টাকা সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হলেও সেই সাহায্য কেউ পায়নি বলে কান্তিবাবুর অভিযোগ। তিনি বলেন, “জানি টাকা দিয়ে মায়ের লুণ্ঠিত সম্মান ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু সামাজিক গ্লানি কাটিয়ে, ওঁদের ঘুরে দাঁড় করাতে আর্থিক সাহায্য জরুরি। রাজ্য সরকার সেটা করছে না।” মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণীর পরিবারের সদস্যদের এ দিন সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, মামলা লড়তে চাইলে সংস্থার তরফে আইনজীবী দেওয়া হবে।

Advertisement

এদিন বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর উত্তরবঙ্গের সদস্যদের নিয়ে নির্যাতিতার বাড়িতে পৌঁছান তিনি। এরপর মাটির দাওয়ায় পাতা মাদুরে বসে নির্যাতিতার মা, বাবা, দাদা এবং বৌদির সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা কথা বলেন। জানতে পারেন ওই তরুণীর বাবা ও এক ভাইও প্রতিবন্ধী। তাদের প্রতিবন্ধী কার্ড নেই বলেও জানতে পারেন। এরপরেই প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক ও সংগঠনের কর্তাদের দ্রুত এই পরিবারের তিন সদস্যের প্রতিবন্ধী কার্ড তৈরির ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন