শিক্ষক-অধ্যাপকের অভাব না মেটানো হলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৫০টি আসনে ছাত্রছাত্রী ভর্তির অনুমোদন নিয়ে সমস্যা হবে বলে জানিয়েছে মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া। ১৫০টি আসনে ছাত্রছাত্রী ভর্তির নিরিখে কলেজে যে সংখ্যায় ‘ফ্যাকাল্টি’ থাকার কথা তার থেকে অন্তত ২০ শতাংশ কম রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তার মধ্যে ‘সিনিয়র রেসিডেন্ট’ পদে ঘাটতি ৩০ শতাংশেরও বেশি। সে কারণেই আপত্তি তুলেছে এমসিআই।
পরিস্থিতি সামাল দিতে অন্য মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে কিছু শিক্ষক-অধ্যাপককে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বদলির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে স্বাস্থ্য শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। অধ্যাপকদের বদলির নথিও গত দু’দিনে ই-মেলে এমসিআইয়ের কাছে পাঠানো হয়েছে। বুধবার তা নিয়ে পর্যালোচনা করেছে এমসিআই। ছাড়পত্র মেলার ব্যাপারে তারা পরিষ্কার করে কিছু জানায়নি। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষ সমীর ঘোষ রায়ের সঙ্গে এ ব্যাপারে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে।
বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে বলা হলেও এমসিআই তা মানতে চায়নি। পরে তাদের জানানো হয় স্বাস্থ্য শিক্ষা দফতরের তরফে শিক্ষক-অধ্যাপকদের বদলি করে এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনার প্রক্রিয়া চলছে। এমসিআইয়ের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই শিক্ষক-অধ্যাপকরা কাজে যোগ দিয়েছে বলে রিপোর্ট পেলে তবেই তাঁরা নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ১৫০ আসনে ভর্তির বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার কথা ভাবতে পারেন।
কলেজেরই একটি সূত্র জানিয়েছে, ১৫০ আসনে ছাত্রছাত্রী ভর্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিভাগে যত জন শিক্ষক-অধ্যাপক থাকার কথা তা নেই। বিভাগ ধরে এখনই এই সংখ্যা মেটানো যাবে না বলে কর্তৃপক্ষের একাংশের মত। তাঁদের দাবি, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে যে রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) রয়েছেন তা এমসিআইয়ের হিসেবের মধ্যে পড়ে না। সমস্যা বেড়েছে সে কারণেও। পরিস্থিতি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে বিস্তারিত জানাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের অধ্যক্ষকে ডেকে পাঠান এমসিআই কর্তৃপক্ষ। সোমবার দিল্লিতে যান তিনি। অধ্যাপকের খামতি না মেটানো হলে ১৫০ আসনের অনুমোদনের ছাড়পত্র দেওয়া মুশকিল হবে বলে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এর পরেই স্বাস্থ্য শিক্ষা দফতরে যোগাযোগ করে বিষয়টি জানালে তারা সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হন।
অধ্যক্ষের দফতরের সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজের পরিকাঠামোর বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ঘাটতি রয়েছে। কলেজের ছাত্রছাত্রীদের হস্টেল, ক্লাস রুম, মাল্টিপারপাস হল, কনভেনশনের জায়গা, এক সঙ্গে একটি ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে ক্লাস করানো মতো ল্যাবরেটরির অভাব রয়েছে। পরিকাঠামোর ঘাটতি মেটানোর ক্ষেত্রে ওই সমস্ত কাজ অনেক দূর এগিয়েছে বলে বিস্তারিত রিপোর্ট এমসিআইয়ের কাছে পেশ করেছেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সে সময় শিক্ষক-অধ্যাপকদের খামতি মেটানোর সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য তাদের জানানো যায়নি।