প্রতিযোগিতায় চারটে দল। তার খেলোয়াড় কেনার জন্য নিলামে রীতিমতো হাঁকডাক। সেই দৌড়ে কারও দাম উঠল পাঁচশো টাকা। কারও বা ৭০ হাজার!
আলিপুরদুয়ার আদালতের আইনজীবীরা এই ভাবে তৈরি করলেন নিজস্ব আইপিএল। তারই লক্ষ্যে দলগঠন করতে নিলাম হয়ে গেল সম্প্রতি।
এত দিন আদালতকক্ষে তর্কবিতর্ক করতেন তাঁরা। এ বার গ্লাভস-প্যাড চাপিয়ে নামবেন মাঠে। তার আগে এই টিম তৈরির হাঁকডাকে তাঁরা আইপিএলের বিনোদনই নিয়ে এলেন যেন। চারটে দলের নামকরণও হয়েছে ওই ভাবে। সেগুলি হল: পিঙ্ক প্যান্থার, নিনজা ব্ল্যাক ডায়মন্ড, নেটিভ উইংস আর রয়্যাল নাইট। দল গঠনে খেলোয়াড় কিনতে গিয়েই যা কিছু খরচ হয়েছে মালিকদের। এই দরাদরিতে মুহুরি আমিনুর ইসলামের দাম উঠে গেল ৭০ হাজারে। ‘‘গত দু’বছর ধরে আমরা এই টুর্নামেন্ট চালাচ্ছি। আমিনুর দারুণ খেলে,’’ বলছিলেন এক উকিল।
সব থেকে বেশি দামের টিম রয়্যাল নাইট। এই দল তৈরি করতে খরচ হয়েছে দু’লক্ষ একুশ হাজার টাকা। আর নেটিভ উইংস সব থেকে কম দামি দল। মাত্র ২৯ হাজার ১০০ টাকায় তৈরি হয়েছে এই দল।
এ বছর যে নিলাম হয়েছে, তাতে সকলের আলোচনা আর উৎসাহ বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। আগামী ৪ জানুয়ারি থেকে আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে শুরু হবে খেলা। চলবে ৬ তারিখ পর্যন্ত।
‘পিঙ্ক প্যান্থার’ টিমের মালিক দেবর্ষি চট্টোপাধ্যায়, ‘নেটিভ উইংস’-এর সত্যজিৎ দাস বা ‘নিনজা ব্ল্যাক ডায়মন্ড’-এর জয়ন্ত সরকাররা এক সুরে বললেন, ‘‘ক্রিকেট ভালবাসি। এটা আমাদের কাছে বিনোদন।’’ শুধু বিনোদনের জন্য এত টাকা খরচ করলেন? তাঁদের জবাব ‘‘জিতলে ‘প্রাইজ মানি’ বাবদ ভাল টাকা পাব।’’ কত? টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান আইনজীবী সমীর মজুমদার জানালেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন দলকে দু’লক্ষ টাকা ও রার্নাসকে এক লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। সঙ্গে ট্রফি থাকছে।’’
বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জহর মজুমদার জানান, সারা বছর তাঁরা আদালতের কাজ ও আইনের পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। শীতের মরসুমে ক্রিকেটের মজাই আলাদা। আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা আইনজীবী সোমশঙ্কর দত্ত বলেন, ‘‘সহকর্মীরা মিলে খেলব। তা ছাড়া, আইপিএল ধাঁচে খেলার চেষ্টা হচ্ছে। দেখাই যাক, কী হয়।’’ ফেক্স ব্যানার তৈরি। কিছু দিনের মধ্যে মাঠ তৈরি হবে। তার পর চলবে জোর কদমে ম্যাচ। একটাই খালি চিন্তা মামলাকারীদের মনে, খেলা হবে সপ্তাহের মধ্যে। তাতে মামলা ধাক্কা খাবে না তো?