কালিয়াগঞ্জের চিঠি

কনভেনশন করে হোক উন্নয়নের কাজ

শনিবার কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডে নির্বাচন শেষ হল। আগামী মঙ্গলবার জানা যাবে, কোন রাজনৈতিক দল আগামী পাঁচ বছরের জন্য পুরসভার মসনদে বসছে। কিন্তু যে রাজনৈতিক দলই পুরসভার ক্ষমতা দখল করুক না কেন, ক্ষমতাসীনদের মনে রাখতে হবে তাঁরা নির্বাচনী প্রচারে শহরের বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার-সহ পথবাতি ও নিকাশির উন্নয়ন, জঞ্জাল অপসারণ-সহ শহরের সার্বিক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০২
Share:

দোকানের জিনিসপত্র এ ভাবে রাখায় সংকীর্ণ হয়ে প়ড়ছে রাস্তা। —নিজস্ব চিত্র।

শনিবার কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ১৭টি ওয়ার্ডে নির্বাচন শেষ হল। আগামী মঙ্গলবার জানা যাবে, কোন রাজনৈতিক দল আগামী পাঁচ বছরের জন্য পুরসভার মসনদে বসছে। কিন্তু যে রাজনৈতিক দলই পুরসভার ক্ষমতা দখল করুক না কেন, ক্ষমতাসীনদের মনে রাখতে হবে তাঁরা নির্বাচনী প্রচারে শহরের বাড়ি বাড়ি পানীয় জল সরবরাহ, রাস্তাঘাট নির্মাণ ও সংস্কার-সহ পথবাতি ও নিকাশির উন্নয়ন, জঞ্জাল অপসারণ-সহ শহরের সার্বিক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন।

Advertisement

তাই জনগণের রায়ে যাঁরা পুরসভার ক্ষমতা দখল করতে চলেছেন, তাঁদের শহরবাসীর স্বার্থে কয়েকটি কথা বলে রাখতে চাই। তা হল, গত দুই দশকে কালিয়াগঞ্জ শহরের ১৭টি ওয়ার্ডে প্রচুর রাস্তা ও নিকাশি-সহ পথবাতি বসেছে। কিন্তু নজরদারির অভাবে দীর্ঘদিন ধরে শহরের বিভিন্ন পাড়ার রাস্তা বেহাল হয়ে রয়েছে। পরিকল্পিতভাবে জলনিকাশির পরিকাঠামো গড়ে না ওঠায় প্রতিবছর বর্ষাকালে কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় জল জমে যায়। শহরে নিয়মিত জঞ্জাল অপসারণ না হওয়ায় যত্রতত্র আবর্জনা জমে থাকায় পরিবেশও দূষিত হয়।

পুর এলাকার বিভিন্ন বাজার সবসময় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। এক সময়ে শহরে পুরসভার জমিতে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের একটি ডিপো থাকলেও কয়েক বছর ধরে তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে শহরবাসীকে দূরপাল্লার সরকারি বাস ধরতে হলে ২৫ কিলোমিটার দূরে রায়গঞ্জে যেতে হয়।

Advertisement

কালিয়াগঞ্জে একটি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল থাকলেও পরিকাঠামোর অভাবে বহু রোগীকে প্রতিদিন রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। ফলে রোগীদের প্রাণের ঝুঁকি থেকেই যায়। গত কয়েক দশক ধরে শহরে শ্রীমতি নদীর কোনও সংস্কার হয়নি। ফলে ওই নদীটির নাব্যতা কমে যাওয়ার সেটি প্রায় বুজে গিয়েছে। নদীটি সংস্কার হলে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকবে, তেমনি সেটিকে কেন্দ্র করে একটি সুইমিংপুল বা জলসম্পদ গড়ে উঠতে পারে।

শহরের বুক চিরে চলে যাওয়া ১০(এ) রাজ্য সড়কটি আরও চওড়া করা প্রয়োজন। রাস্তাটি তুলনামূলক সঙ্কীর্ণ হওয়ায় বেড়ে চলা যানবাহন ও দোকানপাটের চাপে প্রতিদিন শহরে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ও যানজট লেগে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানীয় জলের পরিষেবা পাননি বাসিন্দারা।

মনে রাখতে হবে, শান্তি, সম্প্রীতি, সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের শহর বলে কালিয়াগঞ্জের একটি সুনাম রয়েছে। সেই সুনাম যাতে বজায় থাকে ও বাসিন্দাদের স্বার্থে আগামী পাঁচ বছর যাতে শহরের সার্বিক উন্নয়ন করা হয়, নতুন পুরবোর্ডের কাছে আমার এটাই অনুরোধ। উন্নয়নের সঙ্গে কখনই রাজনীতিকে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়। তাই যে দলই পুরসভার ক্ষমতা দখল করুক, তাঁদের কাছে আমার আর্জি আগামী দিন থেকে নিয়মিত সর্বস্তরের বাসিন্দাদের সঙ্গে নাগরিক কনভেনশন করে সবার পরামর্শ নিয়ে যেন উন্নয়নের কাজ করা হয়।

পম্পা মোদক (দাস)। দক্ষিণ আখানগর, কালিয়াগঞ্জ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন