জেলাশাসক ও তাঁর স্ত্রী। ফাইল চিত্র।
নিখিল রাখি, না কূল রাখি, এই দোটানায় ভুগছেন আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল নেতৃত্ব।
যে দিন ফালাকাটা থানায় আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক নিখিল নির্মল ও তাঁর স্ত্রী নন্দিনী স্থানীয় যুবক বিনোদ সরকারকে মারধর করছে বলে একটি ভিডিয়োয় রটে যায় (আনন্দবাজার এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি), সেই দিনই ফালাকাটায় হাজির ছিলেন যুব তৃণমূল সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে, ফালাকাটার টাউন ক্লাবের সভামঞ্চে অভিষেক যখন উঠছেন, ততক্ষণে ভাইরাল হয়ে গিয়েছে ভিডিয়োটি। জেলা তৃণমূলের বক্তব্য, আলিপুরদুয়ার জেলায় তো বটেই, বিশেষ করে ফালাকাটা এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি ভাল ফল করেছে। তাই অভিষেকের সভা এখানে করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন জেলা নেতারা। তার মধ্যেই স্থানীয় যুবকের উপরে জেলাশাসকের চড়াও হওয়ার অভিযোগে হাওয়া তপ্ত হয়।
জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলা নেতারা সেই সন্ধ্যাতেই অভিষেকের কাছে আর্জি জানিয়ে বলেন, নিখিল নবান্নের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। তিনি এমন আচরণ করলে তার দায়ভার দলকেই বইতে হবে। জেলা তৃণমূল সূত্রে দাবি, এর পরেই কলকাতায় ফোন করে বিষয়টির গুরুত্ব জানান অভিষেক। স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের কথায়, সেই ফোনে যে কাজ হয়েছে, তা গভীর রাতেই স্পষ্ট হয়ে যায়। রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ স্তর থেকে জলপাইগুড়ির ডিভিশনার কমিশনারকে জানানো হয়, আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসককে ছুটিতে যেতে বলা হোক।
জেলা তৃণমূল সূত্রে বলা হচ্ছে, জেলা সভাপতি মোহন শর্মার সঙ্গে জেলাশাসক ও তাঁর শ্বশুরবাড়ির ভাল সম্পর্ক বলেই সকলে জানেন। বরং নন্দিনী কৃষ্ণানের সাম্প্রতিক একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁদের মনোমালিন্য ঘটে। নন্দিনী সেই পোস্টে একটি ছবি দিয়েছিলেন। তাতে দেখা যাচ্ছিল, ডুয়ার্সকন্যার ঘরে বৈঠক চলছে। নন্দিনী জানিয়েছিলেন, সৌরভ ওই বৈঠকে জেলাশাসকের চেয়ারে বসে। একই সঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন, এটা অনুচিত।
সৌরভ এখন বলছেন, ‘‘এক জন জেলাশাসকের এ ধরনের কাজ করা উচিত হয়নি।’’ মোহন শর্মা বলেন, ‘‘বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী দেখছেন, আমি কিছু বলতে পারব না।’’