lock down

খাবার জোটাতে মাস্ক বিক্রি

বাড়িতে বসে মা মাস্ক তৈরি করছেন। আর বাবাই বাড়ির সামনে রাস্তার ধারে বসে তা বিক্রি করছে। 

Advertisement

বিকাশ সাহা

কালিয়াগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৪১
Share:

দায়িত্ব: রাস্তার ধারে এ ভাবেই মাস্ক বিক্রি করে বাবাই। নিজস্ব চিত্র

‘মাস্ক চাই, মাস্ক?’

Advertisement

বিক্রেতার বয়স বারো বা তেরো। জিজ্ঞেস করতে বলল, সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। এ সময় মাস্ক বিক্রি করছে কেন? বাবাইয়ের উত্তর, ‘‘লকডাউনে মায়ের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কাজ তো করতেই হবে।’’

কালিয়াগঞ্জের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পিরপুকুর দক্ষিণ আখানগরের বাসিন্দা বাবাই দে সরলা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ে। করোনাভাইরাস রুখতে লকডাউন চলছে। বন্ধ স্কুলও । এগারো বছর আগে বাবা উত্তমকুমার দে মারা গিয়েছেন। মা রঞ্জনা দে পাল সংসারের হাল ধরতে কখনও বন কুলের বীজ গুঁড়ো কখনওবা কাগজের পাতা তৈরি করে বিক্রি করতেন। এ ছাড়া একটি দর্জির দোকানে কাজ করার পাশাপাশি বাড়িতে টুকটাক সেলাইয়ের কাজ করতেন তিনি। আর্থিক অনটনের জেরে বড় ছেলে টুবাই ১৬ বছর বয়সেই পড়াশোনা ছেড়ে উপার্জনের চেষ্টা শুরু করেছে। কিন্তু লকডাউনের ফলে মা ও দাদার উপার্জনের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাস্ক বিক্রির পথ বেছে নিয়েছে বাবাই। বাড়িতে বসে মা মাস্ক তৈরি করছেন। আর বাবাই বাড়ির সামনে রাস্তার ধারে বসে তা বিক্রি করছে।

Advertisement

বাবাই জানাল, ‘‘প্রতিদিন মাস্ক বিক্রি করে ৫০-৬০ টাকা পাই। সেই টাকা মায়ের হাতে তুলে দিই।’’ রঞ্জনা বলেন, ‘‘ত্রাণ তো দূরে থাক, জনপ্রতিনিধিরা খোঁজ খবরও নেন না। অন্য কাজ তো বন্ধ। বড় ছেলে এর মধ্যেও কাজের খোঁজ করে চলেছে। এখন তাই মাস্ক তৈরি করছি আর বাবাই বিক্রি করে। আর তো কিছু করার নেই, সংসারটা তো চালাতে হবে।’’
৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শিল্পী সরকার বলেন, ‘‘ত্রাণের ব্যাপারটা চেয়ারম্যান দেখছেন।’’ আর পুরপ্রধান কার্তিকচন্দ্র পাল বলেন, ‘‘কেন ওঁরা ত্রাণ পাননি তা দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন