নিশীথ প্রামাণিক। —ফাইল চিত্র।
উপরে ঐক্যবদ্ধ, ভিতরে ভিতরে কিন্তু ফিসফাস চলছেই। কোচবিহারের শহর থেকে গ্রামে এখনও নিশীথ প্রামাণিককে নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে আছে বিজেপি শিবির।
রবিবার ছুটির দিনেও বিজেপির প্রচার ছিল পার্টি অফিসেই সীমাবদ্ধ। দলের কোচবিহার আসনের প্রার্থী নিশীথ ছিলেন অফিসেই। ছিলেন বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা। ছিলেন দলের নানা স্তরের বেশ কয়েকজন নেতাও। বিজেপিতে এ দিন যোগ দিলেন অন্য দলের কয়েকজন নেতাকর্মীও। দলের পতাকা তুলে দিয়ে একযোগে সবাই বললেন, “ভারত মাতা কি জয়।” কিন্তু তার পরেই দফতরের বাইরে নানা জায়গায় ছোট ছোট জটলা দেখা গেল।
নিশীথকে যে এখনও কর্মীরা মন থেকে মানতে পারেননি, বিজেপির অন্দরে অনেকেই সে কথা মেনে নিচ্ছেন। তবে মালতী বলেন, “প্রথম দিনের বিক্ষোভের পিছনে তৃণমূলের হাত ছিল। এখন সবাই এক হয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন।” কিন্তু বিজেপির মধ্যেই যে নিশীথের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, তার প্রমাণ এ দিনও মিলেছে।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
নিশীথের বিরুদ্ধে নানা অসামাজিক কাজের অভিযোগ উঠেছে বারবার। সেই প্রসঙ্গই যেন উঠে এসেছে বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলার পর্যবেক্ষক দীপ্তিমান সেনগুপ্তের কথায়। শনিবার রাত দশটায় ফেসবুক লাইভ করে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল নিশীথ প্রামাণিককে রত্নাকর তৈরি করেছে, বিজেপি করবে বাল্মীকি।’’ দীপ্তিমান দিনহাটার বাসিন্দা এবং দলের কোচবিহার জেলা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। পরে দীপ্তিমান অবশ্য বলেন, “নিশীথের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তাঁর পরিচয় বদলের চেষ্টা হচ্ছিল। আমি সেই কথাই তুলে ধরেছি।” নিশীথের বক্তব্য, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন।
এ দিন কর্মীদের সামনে নিশীথ বলেন, “বড় পরিবারে এমন দুই-একটি ছোট সমস্যা হয়। আবার মিটেও যায়। সব পরিবারেই এমন হয়।” সে কথা শুনে অনেকে হাততালি দেন। কিন্তু খানিক পরেই কর্মকর্তারা দরজা বন্ধ করে বৈঠকে বসে পড়েন। দলীয় সূত্রের খবর, নিশীথ প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই একের পর এক ম্যারাথন বৈঠক শুরু হয়েছে। নিশীথ কোচবিহারে ফেরার পরে সেই বৈঠকেই সময় দিচ্ছেন। তার বাইরে প্রচারে বেরোননি এখনও। অথচ আগামী ১১ এপ্রিলই নির্বাচন। হাতে আর মেরেকেটে দুই সপ্তাহ। এখনও সে ভাবে প্রচারে নামতে না পারায় হতাশ দলের নেতা-কর্মীদের অনেকেই।
আজ, সোমবার সকাল ১১টায় মনোনয়নপত্র জমা দেবেন নিশীথ। বিজেপির দাবি, তার পর থেকেই প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়বেন সবাই। বিজেপি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ প্রচারে কোচবিহার আসবেন।