প্রতীকী ছবি।
যাঁদের মোটরবাইক রয়েছে এমন দশ থেকে পনেরো জন। স্মার্টফোন ব্যবহার করেন এমন আরও দশ জন। দুই মিলিয়ে প্রতিটি বুথ থেকে এমন জনা পঁচিশ যুবকদের নাম চেয়ে পাঠিয়েছেন বিজেপির দিল্লির নেতারা। সেই তালিকা তৈরি করতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপি নেতাদের।
জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে বুথের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তেরোশো। সে ক্ষেত্রে দুই ধরনের কর্মীর মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ২৬ হাজারেরও বেশি। জেলায় এত জন সক্রিয় কর্মী খুঁজে বার করতে নাস্তানাবুদ জেলা নেতারা। যদিও জেলা নেতাদের একাংশের দাবি, তৃণমূলের ভয়ে অনেকেই প্রকাশ্যে হাতে গেরুয়া পতাকা না নিলেও, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
কী নির্দেশ এসেছে বিজেপির জেলা নেতাদের কাছে?
তিন দিন আগে জলপাইগুড়িতে এসেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা অরবিন্দ মেনন। কর্মিসভা করেন তিনি। মেমন নির্দেশ দিয়েছেন, জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের সব বুথে বাইক রয়েছে এমন দশ থেকে পনেরো জন কর্মীর নাম এবং ফোন নম্বরের তালিকা তৈরি করতে। সেই সঙ্গে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন এমন অন্তত দশ জনের নামও চাওয়া হয়েছে। দু’টি পৃথক তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। অর্থাৎ বাইকের তালিকায় যাঁর নাম রয়েছে, স্মার্ট ফোনের তালিকায় তাঁর নাম থাকা চলবে না।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এই নির্দেশের কারণও ব্যাখ্যা করা হয়েছে দলের কোর কমিটির সদস্যদের মধ্যে। পঞ্চায়েত ভোটে দলের কর্মী-সমর্থকদের ‘সন্ত্রাসে’র মুখে পড়তে হয়েছিল বলে বিজেপি বারবার অভিযোগ করছে। লোকসভা ভোট প্রচারের সময় কোথাও বাধার মুখে পড়লে অথবা কারও বাড়ি বয়ে কেউ হামলা চালাতে এলে বাইক রয়েছে এমন কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারবেন। স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে এলাকার অন্যদের কাছে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারও চালানো যাবে। কোথাও হামলা হলে তার পরের বিবরণ এবং ছবি মোবাইলে তোলা যাবে। দলের জেলা স্তরের নেতারাও দ্রুত ঘটনা জানতে পারবেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে সরাসরি কোনও বিজেপি নেতা মন্তব্য করতে চাননি। দলের উত্তরবঙ্গের এক নেতার কথায়, “বিষয়টি একেবারেই সাংগঠনিক। তাই সংবাদমাধ্যমে কিছু বলাই যাবে না।”
কিন্তু প্রতি বুথে এত জন কর্মী কী ভাবে পাওয়া যাবে, তাই এখন চিন্তা নেতাদের। বছর তিনেক আগে থেকেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বারবার বুথ কমিটির তালিকা চেয়েছিল সব জেলা থেকে। বিজেপি সূত্রের খবর, সে সময় প্রতি বুথে ৫ থেকে দশ জনকে নিয়ে কমিটি করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে অনেকে বয়স্ক, কারও বা স্মার্ট ফোন নেই, কেউ বা বাইক চালাতে জানেন না। এখন উপায় কী হবে, তাই আপাতত প্রশ্ন বিজেপি নেতাদের সামনে।