বোমা নিেয় যাচ্ছেন বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র
ভোট শেষ হওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যে ব্যাগ ভর্তি তাজা বোমা উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল আলিপুরদুয়ারের ধারেয়ারহাটে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ আলিপুরদুয়ার শহর থেকে ৯ কিমি দূরে ওই হাটের একটি মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের পাশ থেকে বোমাগুলি উদ্ধার হয়। লোকসভা ভোটে গোলমাল পাকাতেই ওই বোমা সেখানে মজুত করা হয়েছিল বলে একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷ দুপুরেই ঘটনাস্থলের পাশে একটি ঝিলের ধারে সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা বোমাগুলি ফাটিয়ে নিষ্ক্রিয় করেন।
আলিপুরদুয়ার শহর থেকে নয় কিলোমিটার দূরে চাপরেরপাড় ১ পঞ্চায়েতের চালনিরপাক গ্রামের ধারেয়ারহাট থেকে দুই পা এগোলেই কোচবিহার। ৩০ কিমি দূরে অসম সীমানা। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ সেই হাটেই একটি সেলুনে যাচ্ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা দীনেশচন্দ্র দাস। পথে শিক্ষাকেন্দ্রের পাশে একটি ফাঁকা জমিতে একটি নাইলনের বাজারের ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি৷ দীনেশের কথায়, “বাজারের ব্যাগটার দিকে তাকাতেই দেখি ব্যাগের বাইরে দুটি হাত বোমা বেরিয়ে আছে৷” সঙ্গে সঙ্গে সকলকে বিষয়টি জানান তিনি৷ মুহূর্তের মধ্যে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে আলিপুরদুয়ার থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী, ও সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। যায় দমকলও। শিক্ষাকেন্দ্র ফাঁকা করে একটি ঘরে পড়ুয়াদের নিয়ে বসে থাকেন শিক্ষকরা৷ স্থানীয় প্রচুর মানুষ ওই জমির পাশে বোমা দেখতে ভিড়ও জমান৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিআইডি-র বম্ব স্কোয়াড দেখতে পায় ব্যাগে মোট ৯টি দেশি হাতবোমা রয়েছে৷
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
২০১৩-র ২৯ অগস্ট আলিপুরদুয়ার চৌপথী এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে বিস্ফোরণে সিআইডির বম্ব স্কোয়াডের এক কর্মীর মৃত্যু হয়েছিল। তখন অভিযোগ উঠেছিল, ওই সিআইডি কর্মীর পরনে সুরক্ষা পোশাক বম্ব স্যুট ছিলনা৷ এ দিন বোমাগুলি ফাটিয়ে নিষ্ক্রিয় করার সময় বম্ব স্কোয়াডের কর্মীর পরনে সুরক্ষা পোশাক ছিল৷ তবে হাতে ধরে বোমাগুলি সেখানে নিয়ে যাওয়ার সময় দস্তানা ব্যবহার করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। উপস্থিত এক পুলিশ কর্তার দাবি, বম্ব স্কোয়াডের কর্মীদের বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে৷ ফলে এই প্রশ্ন তোলা অনুচিত৷ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, বোমাগুলি কারা ওখানে রাখল তদন্ত করে দেখা হচ্ছে৷
ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। তৃণমূল নেতা, আলিপুরদুয়ার ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাসের অভিযোগ, “ভোটে গোলমাল পাকাতেই বিজেপি অসম থেকে বোমা নিয়ে এসেছিল। কর্মীরা সক্রিয় থাকায় ব্যবহার করতে পারেনি৷” বিজেপির মণ্ডল সভাপতি কালীদাস দাসের পাল্টা অভিযোগ, “বিজেপি যথেষ্ট শক্তিশালী বলেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের ধাঁচে সন্ত্রাস চালাতে বোমা মজুত করেছিল তৃণমূল৷ কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্যই সেগুলি কাজে লাগাতে পারেনি তারা৷”