ট্যাবলোয় প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোট এখনও ঘোষণা হয়নি। কিন্তু তাতে কী? মালদহের রূপকার বলে পরিচিত গনি খান চৌধুরীর ছবিকে সামনে রেখে নির্দল প্রার্থী হিসেবে দক্ষিণ মালদহে ভোট প্রচার শুরু করলেন হাসিম আখতার। মঙ্গলবার তাঁর সমর্থনে প্রচারের একটি ট্যাবলোও ঘোরা শুরু করল কালিয়াচক এলাকায়। এ ছাড়া পোস্টার সাঁটারও কাজ শুরু হয়েছে। ভোট প্রচারে তিনি বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন পোস্টারে। হাসিম নিজে এ দিন প্রচারে যান কালিয়াচক ২ ব্লকের মোথাবাড়িতে। সেখানে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে সমস্যার কথা শোনেন। তবে এই নির্দল প্রার্থী প্রচারে গনি খানের ছবি ব্যবহার করায় আপত্তি তুলেছে কংগ্রেস। যদিও তিনি তাতে আমল দিতে নারাজ।
কে এই হাসিম আখতার? তাঁর বাড়ি মালদহের ইংরেজবাজার শহরের বিবিগ্রাম এলাকায়। কম্পিউটারের ব্যবসা রয়েছে তাঁর। ছাত্র রাজনীতি শুরু করেছিলেন কংগ্রেসের সঙ্গেই। সাংসদ মৌসম নুর যখন রাজ্য যুব কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন তখন হাসিম দক্ষিণ মালদহের যুব কংগ্রেস সভাপতি ছিলেন। পরে কংগ্রেস ছেড়ে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। তাঁর দাবি, তিনি তৃণমূলের জয়হিন্দ বাহিনীর ইংরেজবাজার শহরের পদাধিকারী ছিলেন এবং বর্তমানে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির অন্তর্গত হকার সংগঠনের জেলা সভাপতি ছিলেন। তাঁর দাবি, তিনি তৃণমূলের সঙ্গ ছেড়েই দক্ষিণ মালদহ লোকসভা আসনে নির্দল প্রার্থী হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, মঙ্গলবার থেকে তিনি প্রচারও শুরু করে দিলেন। প্রচারের অঙ্গ হিসেবে এ দিন একটি ট্যাবলোও উদ্বোধন করেন তিনি। সেই ট্যাবলো ঘুরে বেড়াবে গোটা দক্ষিণ মালদহ লোকসভায়। এ ছাড়া এ দিন থেকে পোস্টার সাঁটারও কাজ শুরু হয়েছে। ভোট ঘোষণার আগেই নিজেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে প্রচার শুরু করে দেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়িয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও শোরগোল পড়েছে।
এ দিকে প্রচারে তিনি সামনে রেখেছেন গনি খানের ছবিকে। ট্যাবলোতেও পোস্টারে তাঁরই ছবি সামনে রয়েছে। গনির ছবি ব্যবহার নিয়ে আপত্তি তুলেছে কংগ্রেস।
মালদহ জেলা কংগ্রেসের কার্যালয় সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, “গনি খান চৌধুরী ছিলেন আমৃত্যু কংগ্রেসি। ভোট প্রচারে তাঁর ছবি ব্যবহারের অধিকার কংগ্রেসেরই। ওই নির্দল প্রার্থী অন্যায় ভাবে গনিসাহেবকে প্রচারে ব্যবহার করছেন। ভোট ঘোষণা হলেই এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানাব।’’
যদিও প্রার্থী হাসিম আখতার বলেন, ‘‘গনি খান কংগ্রেসের একার নয়। তিনি গোটা মালদহের মানুষের নয়নের মণি। তাঁর আদর্শকে সামনে রেখেই রাজনীতিতে এসেছিলাম। তাঁর আদর্শকেই পাথেয় করে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। কে কী বলল তাতে কিছু আসে যায় না। মানুষের কাজ করাটাই বড় কথা।’’ এ দিকে তৃণমূলের মালদহ জেলা কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার বলেন, ‘‘কে কোথায় নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন তাতে কোনও প্রভাব পড়বে না। হাসিম দলের কোনও পদে ছিলেন কি না সেটাও জানা নেই।’’