মধ্যমণি: রাহুল গাঁধীকে ঘিরে (বাঁ দিক থেকে) ইশা খান, গৌরব গগৈ, প্রিয়া, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় ও আবু হাসেম খান চৌধুরী। নিজস্ব চিত্র
সভাস্থলের চার পাশে আমবাগান। মুকুল থেকে সবে গুটি ধরেছে। স্থানীয়রা জানালেন, আমের কলমের চারা পোঁতা হয়েছিল বলেই মাঠের নামও রাখা হয় কলমবাগান। জেলার আমের খ্যাতি গোটা বিশ্বজোড়া হলেও আম নিয়ে শিল্প গড়ে ওঠেনি। শনিবার দুপুরে চাঁচলের কলমবাগানের মাঠে জনসভা থেকেই জেলায় আম-কেন্দ্রিক শিল্প গড়ে তোলার আশ্বাস দিলেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি রাহুল গাঁধী। তিনি বলেন, “কেন্দ্রে কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে আমের জেলা মালদহে কারখানা গড়ে তোলা হবে। তাতে চাষিরা সরাসরি ন্যায্য মূল্যে আম কারখানায় বিক্রি করতে পারবেন।” রেশম নিয়েও চাষিদের আশ্বাস দেন রাহুল।
লোকসভা ভোটের মুখে রাহুলের আম নিয়ে আশ্বাস দেওয়াকে একযোগে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী শিবিরের নেতারা। সাংসদ তথা উত্তর মালদহের তৃণমূল প্রার্থী মৌসম নুর বলেন, “রাহুলবাবু ভোটের সময় অনেক প্রতিশ্রুতি, আশ্বাস দিয়ে যান। বাস্তবে আর তা হয় না। তবে মুখ্যমন্ত্রী মালদহের আম বিদেশে রফতানি নিয়ে আশ্বাস দিয়েছিলেন। এখন মালদহের আম বিদেশেও যাচ্ছে।”
যদিও বিরোধীদের কটাক্ষকে উড়িয়ে দিয়ে রাহুলের আম-আশ্বাসকে সামনে রেখেই আম আদমির কাছে পৌঁছতে মরিয়া জেলার কংগ্রেস শিবির। উত্তর মালদহের কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী বলেন, “রাহুলবাবু যা আশ্বাস দেন তা বাস্তবায়িতও করেন। মধ্যপ্রদেশের ক্ষেত্রে তা দেশের মানুষ দেখেছেন।”
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এখন আমের মরসুম। জেলার গাছে গাছে আমের গুটি ধরতে শুরু করেছে। উদ্যান পালন দফতরের কর্তাদের দাবি, চলতি মরসুমেও দু’লক্ষ মেট্রিক টনের উপরে আম উৎপাদন হবে জেলায়। চাষিদের দাবি, আম নিয়ে জেলায় শিল্প নেই। আম প্রক্রিয়াকরণ না হওয়ায় অল্প দামেই বাজারে বিক্রি করে দিতে হয়। তাতে তেমন লাভের মুখ দেখতে পান না তাঁরা।
রাহুল এ দিন বলেন, ‘‘মালদহের আম, রেশম বিখ্যাত। কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে কারখানা গড়ে দেওয়া হবে। সেখানে আমের জ্যাম, জেলি, জুস সহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি করা হবে, যা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি করা হবে।’’
বছর দুয়েক আগে মালদহের সভা থেকে বিদেশে আম রফতানির আশ্বাস দিয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বছর থেকে আম বিদেশে রফতানি হচ্ছে বলে দাবি উদ্যান পালন দফতরের কর্তাদের। যদিও সামান্য সংখ্যক আমই রফতানি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন চাষিরা। তাই রাহুলের আশ্বাসের পরেও সন্তুষ্ট নন তাঁরা। মালদহের ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, “আমই পারে জেলার অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটাতে। অথচ, বহু আশ্বাস মিললেও বাস্তবে কিছু হয় নি।”