রাসমেলার মাঠে মোদীর সভার প্রস্তুতি। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
একদিকে কড়া নিরাপত্তার মোড়কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার মঞ্চ তৈরির তোড়জোড় চলছে। অন্যদিকে মাইকে প্রচার করে সভায় নজরকাড়া জমায়েত করতে জোর প্রচার হচ্ছে। সবমিলিয়ে আজ, রবিবার কোচবিহারের রাসমেলা ময়দানে মোদীর সভা আয়োজনে তৎপরতা তুঙ্গে উঠেছে গেরুয়া শিবিরে।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা থেকে কর্মী, সমর্থকরা আসবেন। বিজেপির বিভিন্ন মণ্ডল কমিটির উদ্যোগে যানবাহনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরদিন সোমবার ওই মাঠেই সভা করার কথা রয়েছে তৃণমূল নেত্রী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের। সেকথা মাথায় রেখে নজরকাড়া জমায়েতে বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দলীয় নেতৃত্বের একাংশের দাবি, ভিড়ের নিরিখে মোদীর সভা এগিয়ে থাকলে ভোটের মুখে সমর্থকদের উৎসাহও আরও বাড়বে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “মোদীজির সভায় জনজোয়ার হবে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আসবেন। সমস্ত রকম প্রস্তুতিই এগোচ্ছে।”
রাসমেলা ময়দানের দখল নিয়ে কয়েকদিন থেকেই বিজেপি ও তৃণমূলের টানাপড়েন চলছিল। শুক্রবার ওই জটিলতা মেটার ইঙ্গিত মেলে। তৃণমূলের দাবি, রাজনৈতিক সৌজন্যের নিরিখে মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চের সামনে বাঁধা ছাউনির কিছুটা অংশ খুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রসঙ্গত, ওই ছাউনি খোলা না হলে প্রধানমন্ত্রীর সভার জন্য অর্ধেক মাঠে বসার জায়গা কমে যেত বলে অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। মাঠের উত্তর প্রান্তে মোদীর সভামঞ্চ তৈরির জায়গা চূড়ান্ত হয়। শনিবার সকালে কড়া নিরাপত্তায় মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়। স্নিফার ডগ এনে তল্লাশিও চলে। বিকেলের মধ্যে বাঁশ, কাঠের খুঁটি বসানো হয়। মাঠে যান বিজেপির প্রার্থী, নেতারা। বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত বলেন, “তিন দশক পর কোনও প্রধানমন্ত্রী কোচবিহারে সভা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কোচবিহারের নাড়ির সম্পর্ক। কারণ ছিটমহলের সম্পর্ক। তাই রবিবারে ভিড়ও উপচে পড়বেই।”
প্রধানমন্ত্রী সভায় কী কী বিষয়ে বক্তব্য রাখতে পারেন তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। কর্মীদের কয়েকজনের কথায়, ছিটমহল সংক্রান্ত বিষয়ের পাশাপাশি দিনহাটা ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট, দুই বাংলার ট্রেন চলাচল চালুর দাবির মতো নানা বিষয়ও উঠতে পারে মোদীর বক্তব্যে। কোচবিহারে বিমান চালু নিয়ে কিছু বলেন কি না সেটাও দেখার। মুখ্যমন্ত্রীর অসমের সভা নিয়েও কিছু বলতে পারেন।
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী কোচবিহার বিমানবন্দরে বা হাসিমারায় হেলিকপ্টারে নামবেন। সেখান থেকে সোজা আসবেন সভাস্থলে। সকাল ১০টা থেকে প্রায় ৪০ মিনিট কোচবিহারে থাকার কথা রয়েছে তাঁর। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য বলেন, “এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী গত পাঁচ বছরে একবারেও কোচবিহারে আসেননি। এখানকার যা উন্নয়ন রাজ্য সরকার করেছে। যে মাঠে উনি সভা করবেন তার সংস্কারও করেছে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সরকার। মানুষ ওদের প্রত্যাখান করবেন।” তাঁর দাবি, সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর সভাতেই রেকর্ড ভিড় হবে। সব মিলিয়ে দুই শীর্ষ নেতা, নেত্রীর সভার ভিড়ের টক্করে তাতছে ভোট রাজনীতি।