খুশি: প্রার্থীপদ ঘোষণার পরে দশরথ। ছবি: নারায়ণ দে
লোকসভা ভোটে দলের প্রার্থী দশরথ তিরকেকে জেতাতে কোর কমিটির নেতাদের শপথ বাক্য পাঠ করালেন আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার বিকেলে আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই কোর কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতারা। যা দেখে বিরোধীদের দাবি, তৃণমূলের নেতারা গোষ্ঠী কোন্দল সামলাতেই এই প্রক্রিয়ার সাহায্য নিয়েছেন।
সেই সঙ্গে, বিজেপিকে রোখার চেষ্টাও তৃণমূল নেতারা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে মাদারিহাট আসনটি বিজেপি জিতেছিল। তার পরে গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলার বেশ কিছু জায়গায় তৃণমূলকে রীতিমতো বেগ দেয় বিজেপি। তৃণমূল নেতাদের একাংশেরই দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে দলের অন্দরে হওয়া কোন্দলের জেরেই এই ঘটনা ঘটে।
লোকসভা নির্বাচনে যাতে দলের সেই গোষ্ঠী কোন্দলের কোনও প্রভাব না পড়ে, সে জন্য এ দিনের বৈঠকের শুরু থেকেই সতর্ক ছিলেন তৃণমূলের জেলা নেতারা। দলের কোর কমিটির সদস্যদের তৃণমূল জেলা সভাপতি মোহন শর্মা সাফ বলেন, “ভুল বোঝাবুঝি দূর করে প্রত্যেক নেতাকে এখন থেকেই দশরথবাবুকে জেতানোর জন্য ঝাঁপাতে হবে।” সেই সঙ্গে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসও মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে দলের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা শীর্ষ নেতৃত্ব। বরং, আগামী ক’দিন নিজের নিজের এলাকায় গিয়ে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজ মানুষের সামনে তুলে ধরার নির্দেশ দেন তাঁরা। নিজেদের মধ্যে কোন্দল দূরে সরিয়ে রেখে সবাইকে এখন থেকেই ময়দানে ঝাঁপানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গত মঙ্গলবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়৷ আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে ফের প্রার্থী করা হয় দশরথ তিরকেকে।
বৃহস্পতিবার সকালেই দশরথবাবুকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা থেকে আলিপুরদুয়ারে ফেরেন দলের জেলা সভাপতি মোহন শর্মা।
বিকেলে শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডের পাশে একটি ভবনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে কোর কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে নির্বাচনের আগে কিভাবে নেতা-কর্মীদের প্রচারে ঝাঁপাতে হবে সেটাও নির্দিষ্ট করে দেন দলের নেতারা।
এদিন সব চেয়ে বড় চমকটা অবশ্য ছিল বৈঠকের শেষের দিকে। কোন্দলকে দূরে সরিয়ে বা আত্মবিশ্বাসে ভর না করে কোর কমিটির সদস্যদের কী কী করতে হবে, সেই বার্তা দেওয়ার পর আচমকাই সকলকে শপথ বাক্যও পাঠ করান জেলা শীর্ষ নেতারা। যে শপথবাক্যে দলের প্রার্থীকে বিপুল ভোটে জেতানোর কথা বলা হয়।
যা শুনে বিজেপির এক জেলা শীর্ষ নেতা বলেন, ‘‘মানুষ তো বটেই, এমনকি দলের অনেক নেতাও যে তাঁদের সঙ্গে নেই, তা আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝে গিয়েছেন। সে জন্যই তাঁদের দিয়ে শপথবাক্য পাঠ করাতে হচ্ছে।’’
মোহনবাবু বলেন, ‘‘আলিপুরদুয়ারের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর যে ঋণ রয়েছে, তা পূরণ করতেই আমরা সকলে এদিন শপথ নিয়েছি৷ এই কেন্দ্রে আমরা আড়াই লক্ষ ভোটে জিতব।’’