মালদহ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন নিত্য সিংহ। — নিজস্ব চিত্র
জাতীয় সড়কের ধারে গজিয়ে ওঠা ধাবাগুলিতে রমরমিয়ে চলছে বেআইনি মদ বিক্রির কারবার। এর ফলে ধাবাগুলিতে মদ্যপদের গোলমাল রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ ছিলই। মদ্যপদের হাতে এক ব্যক্তি আক্রান্ত হওয়ার পরে সেই অভিযোগ জোরদার হয়েছে পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়িতে।
বুধবার রাতে মঙ্গলবাড়ির নলডুবিতে মদ্যপদের হাতে স্থানীয় এক লরিচালক আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ। নিত্য সিংহ নামে ওই যুবক আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পরে মালদহ থানার পুলিশ গিয়ে বন্ধ করে দেয় ধাবাটি। তবে ধাবার মালিকদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। বেআইনি ধাবা চলতে থাকায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বুধবার রাত নটা নাগাদ নলডুবি এলাকায় একটি ধাবাতে খেতে গিয়েছিলেন নিত্য। পাশের টেবিলেই পাঁচ যুবক বসে মদ খাচ্ছিলেন। খাওয়ার পরে ধাবার কর্মী দাম চাইলে ওই যুবকেরা নিত্যবাবুকে টাকা দেওয়ার ‘হুমকি’ দেয় বলে অভিযোগ। নিত্য তা দিতে অস্বীকার করলে ওই পাঁচ জন লোহার রড দিয়ে তাঁর আঘাত করে। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুটি মোটরবাইকে গাজলের দিকে পালিয়ে যায় তারা। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা গিয়ে নিত্যবাবুকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। নিত্য বলেন, ‘‘অচেনা ওই যুবকেরা আমাকে আচমকা হুমকি দিয়ে বলে তাঁদের খাওয়ার ৪০০ টাকা মিটিয়ে দিতে। আমি অস্বীকার করলে শুরু হয়ে যায় মারধর। তারপরে আমার আর কিছু মনে নেই।’’
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরাতন মালদহের মঙ্গলবাড়ির বুলবুলচণ্ডী মোড় থেকে শুরু করে আটমাইল পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিমি এলাকায় জাতীয় সড়কের ধারে প্রায় শতাধিক ধাবা, ছোট হোটেল রয়েছে। দিনের বেলায় সেই ধাবাগুলিতে খাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও, সূর্য ডুবতেই নানা অসামাজিক কাজ চলে বলে অভিযোগ। এমনকী, প্রকাশ্যেই সেই ধাবা গুলিতে চলে মদ বিক্রির কারবার। তার জেরেই ধাবাগুলিতে অশান্তি রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার জেরে অতিষ্ঠ পুরাতন মালদহের সাধারণ মানুষ। পুরাতন মালদহের বিধায়ক কংগ্রেসের ভূপেন্দ্রনাথ হালদার বলেন, ‘‘খাবারের আড়ালে মদের কারবারের কথা পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। যার জন্য এ দিন এমন একটা ঘটনা ঘটল।’’
এ দিন মালদহ থানার পুলিশ গিয়ে ধাবাটি বন্ধ করে দেয়। তবে ধাবার মালিক গৌর ঘোষকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ধাবার বৈধ কাগজ না থাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর অভিযুক্ত যুবকদেরও খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, ‘‘বেআইনি মদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলে। প্রয়োজনে সেই অভিযান আরও বাড়ানো হবে।’’