Mahua Gope

মহুয়ার ভাইফোঁটায় আমন্ত্রিত ‘বিক্ষুব্ধ’ও

তৃণমূল সূত্রের খবর, সব গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরাই আমন্ত্রণ পেয়েছেন। মাস কয়েক পরেই পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা। পুরভোটে ‘গোষ্ঠীকোন্দলে’ জেরবার হয়েছিল তৃণমূল।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২২ ০৮:২৯
Share:

মন্ত্রী বুলু চিক বরাইককে ভাইফোঁটা দিচ্ছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ। নিজস্ব চিত্র

ব্লক সভাপতি থেকে বুথের নেতা— সবাইকে ডেকে ভাইফোঁটা দিচ্ছেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ। বুধবার এক পর্বের ফোঁটা হয়েছে। সেখানে ফোঁটা নিয়েছেন মন্ত্রী বুলু চিক বরাইক। আজ, বৃহস্পতিবারও রয়েছে আয়োজন। জেলা নেত্রীর আমন্ত্রণ পেয়েছেন দলের ‘বিক্ষুব্ধ’ আর ‘অভিমানী’রাও। ফোঁটায় আমন্ত্রিত পুলিশকর্তা, প্রশাসনিক আধিকারিকেরাও। শাসক দলের জেলা নেত্রীর প্রশাসনের আধিকারিকদের ভাইফোঁটায় আমন্ত্রণ জানানোর উদ্যোগকে ‘সৌজন্য’ বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে জেলা তৃণমূলের প্রায় সর্বস্তরের সক্রিয় কর্মী, শাখা সংগঠনের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানোয় এবং বিশেষ করে ‘বিক্ষুব্ধদের’ ডাকায় বিষয়টি তৃণমূলের অন্দরে ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, সব গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীরাই আমন্ত্রণ পেয়েছেন। মাস কয়েক পরেই পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা। পুরভোটে ‘গোষ্ঠীকোন্দলে’ জেরবার হয়েছিল তৃণমূল। তাই পঞ্চায়েত ভোটের আগে, সব গোষ্ঠীর নেতাদের ফোঁটা দিয়ে জেলা সভানেত্রী কি কোনও বার্তা দিতে চাইছেন— জোর চর্চা ঘাসফুল শিবিরে। মহুয়ার লাটাগুড়ির বাড়িতে ফোঁটার আয়োজন করা হয়েছে। ভাইফোঁটায় পায়েস মহুয়ার হাতেরই। থাকছে পোলাও, ভাজা-সহ নানা নিরামিষ পদের আয়োজন। তৃণমূল সূত্রের খবর, গত বারের আয়োজনকে ছাপিয়ে যাচ্ছে এ বছরের ফোঁটা। গত বার চারশো জনকে ফোঁটা দিয়েছিলেন মহুয়া। এ বার সংখ্যা হাজার ছুঁতে পারে। মঙ্গলবার সন্ধে থেকে তৃণমূল নেতাকর্মীরা মোবাইল ফোনে জেলা সভানেত্রীর আমন্ত্রণ পেতে শুরু করেন। পুরভোটে দলের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা শেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁকে প্রথমে মৌখিক এবং পরে, মোবাইলে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মহুয়া। শেখর বলেন, ‘‘আমাদের ক্লাবে থাকতে হয়। দেখছি, যেতে পারি কি না। মহুয়া আমায় নিজেই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’’ পুরভোটের পরে, ‘অভিমানী’ শেখরকে সক্রিয় রাজনীতিতে তেমন দেখা যায়নি। ভাইফোঁটায় বরফ গলবে কি না, সময়ই তা বলবে।

জেলার বিধায়ক, শ্রমিক নেতা-সহ আমন্ত্রিতদের মধ্যে কারা কারা উপস্থিত থাকেন, তা নিয়েও চর্চা তৃণমূলের অন্দরে। কয়েক জন নেতা যেমন আগে থেকেই নিজেদের ‘অন্য কাজে ব্যস্ত’ থাকার কথা জানিয়েছেন। জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় জলপাইগুড়িতে বড় বাজেটের কালীপুজো করেন। প্রতি সন্ধ্যায় এখন রাজ্য এবং দেশের জনপ্রিয় শিল্পীদের নিয়ে অনুষ্ঠান চলছে সৈকতের পুজোপ্রাঙ্গণে। মহুয়ার আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমায় পুজোয় থাকতে হয়। এত ভিড় হয়! জানি না, সময় পাব কি না!’’

Advertisement

মহুয়া গোপ এ দিন বলেন, ‘‘এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। আমি তো কারও দিদি বা বোন! তাই ফোঁটা দিই। গত বারও দিয়েছি।’’ বিজেপি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘উৎসব নিয়ে কিছু বলব না। উৎসব সকলের। তবে তৃণমূল ধীরে ধীরে জনবিচ্ছিন্ন হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement